Breaking News

লালপুরে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ

নাটোরের লালপুরে গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। পরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজকের পূর্বঘোষিত স্মরণসভা স্থগিত করেছে উপজেলা বিএনপি।

লালপুর উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাবেক সাংসদ ফজলুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ গৌরীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে স্মরণসভা আহ্বান করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। সভা করার জন্য মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ ৬ আগস্ট গৌরীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেন।

স্মরণসভা উপলক্ষে লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় প্রচারণা চালানো হয়। ১৫ আগস্ট বিদ্যালয় থেকে জানানো হয়, ২০ আগস্ট ওই বিদ্যালয়ের মাঠ বিএনপিকে দেওয়া যাচ্ছে না। ওই দিন মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শোকসভা করবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পক্ষ থেকেও বিএনপিকে একই কথা জানানো হয়।
এ অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে উপজেলা বিএনপি ও স্মরণসভা প্রস্তুতি কমিটি গৌরীপুরে প্রয়াত ফজলুর রহমানের বাড়িতে জরুরি সভা করে। সভায় ওই নেতার বাড়ির আঙিনায় আজ বেলা তিনটায় মৃত্যুবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ উপলক্ষে সেখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়।
এদিকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফজলুর রহমানের বাড়ির সামনের রাস্তায় ও গৌরীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গৌরীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আবদুর রাজ্জাক (২৮) নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মী মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হন। সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের জমায়েত থেকে তিনবার ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে বেলা একটার দিকে লালপুর ত্রিমোহনীতে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা বিএনপি গতকাল বেলা আড়াইটায় ফজলুর রহমানের বাসায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে। সম্মেলনে তাঁরা আজকের স্মরণসভা বাতিল ঘোষণা করেন। সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অভিযোগ করেন, লালপুরে বিএনপির কার্যালয়ের আসবাব লুট, কাগজপত্র তছনছ, চেয়ার ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী বলেন, ‘লালপুরে বিএনপির কোনো অফিস আছে বলে আমার জানা নেই। তাই ভাঙচুরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাদের অনুষ্ঠানের জায়গায় তারা অনুষ্ঠান ডেকে ছিল কেন—তা বোধগম্য নয়। আবার তারাই আমাদের কর্মীদের আহত করেছে।’
লালপুর থানার ওসি আবু ওবায়েদ বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। লালপুরে বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুরের কোনো অভিযোগ বিএনপির পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments