ঈদে বাড়িফেরার প্রস্তুতি

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী থেকে বাড়িফেরার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে মানুষ। বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও উড়োজাহাজ- স্বভাবতই সব বাহনে আগাম টিকিটের চাপ রয়েছে। তবে ট্রেনের টিকিটের জন্যই ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বেশি। কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও চাহিদামাফিক টিকিট পাননি অনেকে। বিশেষ করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরার টিকিট নিয়ে অভিযোগ বেশ জোরালো। এ অবস্থায় আমরা মনে করি, টিকিট নিয়ে যেন কোনো ধরনের অনিয়ম না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের কঠোর দৃষ্টি রাখা উচিত। বাসের টিকিট নিয়ে অবশ্য তেমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বরাবরের মতো অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে লঞ্চের আগাম টিকিট ক্রয়-বিক্রয়ে এখনও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এবার এমন একটি সময়ে ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে যাচ্ছে যখন দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে দেখা দিয়েছে প্রবল বন্যা। বন্যার কারণে এসব অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে রেললাইনের মাটি সরে গেছে, কোথাও ভেঙে পড়েছে রেল সেতু। ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যার কারণে অনেক স্থানে সড়ক যোগাযোগও ব্যাহত হচ্ছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে গর্ত। বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ১৮টি স্থান। মহাসড়কের অনেক স্থান এখনও হাঁটুপানির নিচে। ফলে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকার সড়ক যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
এ পরিস্থিতি সত্ত্বেও শত প্রতিকূলতা মাথায় নিয়েই নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবে মানুষ। বছরের দুই ঈদে শেকড়ের টানে বাড়ি যাওয়া নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করাই সবার উদ্দেশ্য। প্রকৃতির ওপর মানুষের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা শুধু আশা করতে পারি, মানুষের ঈদযাত্রা শুরু হওয়ার আগে দেশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন ও সড়কগুলো যথাসম্ভব দ্রুত মেরামত করা হবে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঈদের আগে ও পরে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন ও ব্রিজগুলো মেরামতের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শুধু ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে ৪ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো অস্থায়ীভাবে মেরামত করার উদ্যোগও নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, বৃষ্টি না হলে ঈদের আগেই ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে। মানুষ এসব প্রতিশ্রুতি ও উদ্যোগের বাস্তবায়ন দেখতে চায়।

No comments