Breaking News

গানের মাঝেই সময় কেটে যায়।




ধারাবাহিকভাবে বেশ কিছু শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন ফোক ও লালন গানের জনপ্রিয় শিল্পী শাহনাজ বেলী। গান নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন দীর্ঘ সময়। এতটা সময় পরও এই মাধ্যমে সমান ব্যস্ত তিনি। নতুন গানের বাইরে সারা বছরই স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন দেশ-বিদেশে। তবে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এখন স্টেজ শো খানিক কম আয়োজন হচ্ছে। তাই নতুন
গানে মনোযোগী হয়েছেন এ শিল্পী। সব মিলিয়ে কেমন যাচ্ছে চলতি সময়টা? উত্তরে শাহনাজ বেলী বলেন, অনেক ভালো কাটছে। গানের মাঝেই সময় কেটে যায়। স্টেজ শো-এর কী অবস্থা? তিনি বলেন, স্টেজ নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকি। তবে এই সময়ে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে কম হচ্ছে শো। আর লন্ডন ও আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত কিছু সমস্যা থাকায় আর যাইনি। নতুন গানের কী খবর? শাহনাজ বেলী আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন, কবির বকুল ভাইয়ের কথা ও ইমন সাহার সুরে একটি গান করছি। ফোক ঘরানার এ গানটির কাজ এখন চলছে। খুব শিগগিরই কণ্ঠ দেবো এতে। এছাড়া আরও কিছু গানের পরিকল্পনা করছি। রাধারমনের  গান নিয়ে একটি অ্যালবাম করার কথা ছিল। সেটা কতদূর? শাহনাজ বেলী বলেন, সেটার কাজ তো শেষ করে ফেলেছি। ১০টি গানের রেকর্ডিং হয়েছে। মাস্টার আমার হাতে। তবে অ্যালবাম কোন সময়টায় বের করবো, সেটা চিন্তা করছি। কারণ, একটি অ্যালবামের পেছনে অনেক আর্থিক ব্যাপার থাকে। তাই সময়-সুযোগ মতোই অ্যালবামটি প্রকাশ করতে চাই। এখন যারা কাজ করছে তারা বেশিরভাগই নিজেদের অর্থায়নেই অ্যালবাম করছে। আসলে শিল্পীদের এখন সম্মান ও সম্মানীর মূল জায়গা হলো স্টেজ শো। সব শিল্পী কিন্তু আবার সেটা করতে পারছেন না। যারা পরিচিত মুখ স্টেজে, তাদের কদরই বেশি। তাছাড়া ফোক গানে ডলি আপা, মমতাজ আপা ও আমার পরে তেমন একটা কেউ বের হয়ে আসেননি। অনেকের মধ্যে সম্ভাবনা থাকলেও বেশি দিন দীর্ঘস্থায়ী হতে পারছেন না। আসলে গানে দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে হলে তো কষ্ট করতে হবে। সেটা কী রকম? শাহনাজ বেলী বলেন, দেখুন আমার বাবা ছিলেন একজন বাউল। তার কাছেই আমার হাতেখড়ি। এরপর অনেকের কাছে আমি শিখেছি। আমাদের বাসায় বাউলদের আড্ডা হতো। গান হতো। আমি সেখান থেকেও শিখেছি। আমি খুব উপভোগ করতাম। গান আমার আত্মার সঙ্গে মিশে আছে। আমি যেহেতু বাউলের কন্যা, তাই বিভিন্ন ধরনের গানই গাইতে পারি। তবে লালনের গানের শিল্পী হিসেবেই আমি বেশি পরিচিত। আমি লালনের গান বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক কষ্ট করে সংগ্রহও করেছি। কিন্তু এখন অনেকেই দেখছি সব ধরনের গান গাইছেন। আধুনিক, ফোক, লালন, রক এ সব ধরনের গানই অনেক শিল্পী গেয়ে থাকেন। যার ফলে স্পেশালিটি তৈরি হচ্ছে না। একটি জায়গা ধরে কাজ করলে হয়তো এই শূন্যতাটা মিটবে। তাহলে এখান থেকে বেরিয়ে আসার আর কী উপায় আছে বলে মনে করেন? শাহনাজ বেলী বলেন, এখনকার শিল্পীরা রেডিমেট গান পাচ্ছে। কথা-সুরের গভীরতা অনুভব করছে না। আমি কুষ্টিয়া গিয়ে বিভিন্নভাবে লালনের অপ্রকাশিত গান সংগ্রহ করেছি। এখনও করছি। সেগুলো শুনেছি, গেয়েছি। ভালোবাসা থেকে সেগুলো পরবর্তী সময়ে স্টেজে,  অ্যালবামে গেয়েছি। শুধু লালন না, আমি বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে বাউলদের কাছ থেকে গান সংগ্রহ করি, গাই। তাদের গানগুলো নিজের কণ্ঠে ধারণ করি। এখনকার ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগই নামই উল্লেখ করে না মূল শিল্পী, সুরকার ও গীতিকবিদের- এটা খুব দুঃখজনক ব্যাপার। শাহনাজ বেলী আরও বলেন, এখন গানে নিজস্বতা তৈরির চেষ্টা খুব কম দেখি। মৌলিক গান করার চেষ্টা কম। অন্যের গান গাওয়ার প্রবণতা বেশি এখনকার শিল্পীদের মধ্যে। তবে সবার কথা বলছি না। অন্যের গান গেয়ে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না। শক্ত অবস্থানও তৈরি সম্ভব না। তাই আমি বলবো অবশ্যই মৌলিক গান তৈরি করার কথা। পাশাপাশি নিজের একটি আলাদা স্টাইল তৈরি করতে হবে।

No comments