Breaking News

বিদেশে নেবেন না, আমি দেশেই চিকিৎসা নেব’ এখন কি বলবেন?


শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালের কাউন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ওই হাসপাতালে গিয়ে তিনি নিজে নিবন্ধন ফরম পূরণ করে ফি দিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান l ছবি: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সৌজন্যে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  গাজীপুর জেলায় তাঁর মায়ের নামে নির্মিত হাসপাতালে নিজে টিকিট কেটে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে যেন বিদেশে পাঠানো না হয়। তিনি এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে চান। খবর বাসসের।
শেখ হাসিনা  সকালে কাশিমপুরের তেঁতুইবাড়ি এলাকায় অবস্থিত শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যান। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়তুন সোলায়মান ও পরিচালক আরিফ মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে পৌঁছে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে নিজের নাম নিবন্ধন এবং নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেন। পরে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহর তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত প্রধানমন্ত্রীর নাক, কান ও গলার পরীক্ষা করেন। চোখ পরীক্ষা করেন অধ্যাপক দ্বীন মো. নুরুল হক। এ ছাড়া শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ওয়াজিহা আক্তার জাহান, বনজবা ও শাহানা ফেরদৌস স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যদি কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে আপনারা আমাকে বিদেশে নেবেন না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওঠাবেন না। আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেব।’
স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরও আগেই আমার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে এখানে আসার ইচ্ছা ছিল। আমরা চিন্তা করেছি, ভবিষ্যতে এখানে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ শ্রমিক। এখানে সাধারণ মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাদের চিকিৎসার কষ্ট লাঘব করা এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। তা ছাড়া এই এলাকায় উন্নতমানের হাসপাতালের সংখ্যা কম। সেই চিন্তা থেকেই এখানে এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিই।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানকার বেশির ভাগ রোগী আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাদেরকে আর্থিক দিক থেকে সুবিধা দিতে হবে।’ তিনি চিকিৎসকদের কনসালট্যান্সি ফি কমানোরও পরামর্শ দেন।
হাসপাতালের তহবিলে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু হাসপাতালটি আমাদের মায়ের নামে, তাই এখানে আমাদের পরিবারের সবাই অনুদান দেবে। আপনাদের ও হাসপাতালের যেকোনো সমস্যা আমাদের নিয়মিত জানাবেন।’
প্রথম আলোর গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ হাসপাতালটিকে বেছে নেন। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান কেপিজে ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে এ হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। এর নামকরণ হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে। এখানে চিকিৎসাধীন রোগীদের বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সাহায্য দেওয়া হয়।

No comments