বিচারককে আইন দেখালেন আসামি রানা!
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হাজারো মানুষের মৃত্যুর
জন্য তাকে দায়ী করা হয়, সেই সোহেল রানা দুদকের এক মামলার রায় ঘোষণার সময়
বিচারককে বললেন, রায়ে কী থাকতে হবে।
সম্পদের হিসাব না দেওয়ায় এ মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে তিন
বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬ এর ২ ধারা অনুযায়ী এটাই এ অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা।
রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা জানান, বিচারক যখন সাজা ঘোষণা করেন, তখন রানার মধ্যে অনুশোচনার কোনো লক্ষণ তারা দেখেননি।
বরং কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে রানা বলেন, “স্যার, রায়ের মধ্যে যেন হাজতবাসকালীন মেয়াদ বাদ দেওয়া হয়।”
উত্তরে বিচারক বলেন, “সেটা তোমার কাছ থেকে আমার শুনতে হবে?”
মাদক সেবন, অবৈধ অস্ত্র রাখা, ইমারত বিধি, ভবনের নকশা জালিয়াতি ও হত্যার অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা রানার বিরুদ্ধে বিচারাধীন।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাসস্ট্যন্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা
ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরও হাজারখানেক শ্রমিক, যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
বাংলাদেশের ওই ঘটনা সে সময় আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। দেশে কারখানার অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এলে সরকার ও মালিকরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।
এক সময় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেওয়া রানা ওই ঘটনার পর পালিয়ে যান। চারদিন পর যশোর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা।
এসব মামলার তদন্তে জানা যায়, রানা প্লাজার নকশা অনুমোদন করা হয়েছিল দুর্নীতির মাধ্যমে। প্রথমে শপিং কমপ্লেক্স করার কথা বলা হলেও পরে পাঁচটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রানা প্লাজার অবকাঠামো নির্মাণেও ত্রুটি ছিল, ব্যবহার করা হয়েছিল নিম্নমানের সামগ্রী।ভবনে ফাটল ধরার পর ঝুঁকি জেনেও ঘটনার দিন শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
সোহেল রানার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নেমে দুদক সে সময় জানতে পারে, রানা
প্লাজা ছাড়াও সাভারে আট তলা বাণিজ্যিক ভবন রানা টাওয়ার, পাঁচ তলা একটি
আবাসিক ভবন এবং মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একটি দোতলা বাড়ির মালিক তিনি।এছাড়া
রানা ব্রিকস ও এম এ কে ব্রিকস নামে দুটি ইটভাটারও সন্ধান পান দুদক
কর্মকর্তারা। তারা জানতে পারেন, অন্তত ২৩টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সোহেল
রানা লেনদেন করতেন।
সাভারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের ঘনিষ্ঠ সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, অবৈধভাবে জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এলাকায়।
রানা প্লাজা ধসের কয়েক মাস আগেও সাভার এলাকা পোস্টারে ছেয়ে ফেলেন রানা; সেখানে তার পরিচয় লেখা হয় সাভার পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ জংয়ের ছবিও সেখানে ছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মুরাদ জংয়ের মদদেই মাদক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে অর্থশালী হয়ে ওঠেন রানা; যদিও মুরাদ জং তা বরাবরই নাকচ করে এসেছেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সে সময় দাবি করেছিলেন, রানা তাদের কেউ নন। তবে পরে ‘বিতর্কের অবসান ঘটাতে’ সাভার থানা ও পৌর যুবলীগের সেই কমিটিই বিলুপ্ত করা হয়েছিল।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬ এর ২ ধারা অনুযায়ী এটাই এ অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা।
রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা জানান, বিচারক যখন সাজা ঘোষণা করেন, তখন রানার মধ্যে অনুশোচনার কোনো লক্ষণ তারা দেখেননি।
বরং কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে রানা বলেন, “স্যার, রায়ের মধ্যে যেন হাজতবাসকালীন মেয়াদ বাদ দেওয়া হয়।”
উত্তরে বিচারক বলেন, “সেটা তোমার কাছ থেকে আমার শুনতে হবে?”
মাদক সেবন, অবৈধ অস্ত্র রাখা, ইমারত বিধি, ভবনের নকশা জালিয়াতি ও হত্যার অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা রানার বিরুদ্ধে বিচারাধীন।
রানা প্লাজা ধসকে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে ধরা হয়
বাংলাদেশের ওই ঘটনা সে সময় আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। দেশে কারখানার অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এলে সরকার ও মালিকরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।
এক সময় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেওয়া রানা ওই ঘটনার পর পালিয়ে যান। চারদিন পর যশোর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা।
এসব মামলার তদন্তে জানা যায়, রানা প্লাজার নকশা অনুমোদন করা হয়েছিল দুর্নীতির মাধ্যমে। প্রথমে শপিং কমপ্লেক্স করার কথা বলা হলেও পরে পাঁচটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রানা প্লাজার অবকাঠামো নির্মাণেও ত্রুটি ছিল, ব্যবহার করা হয়েছিল নিম্নমানের সামগ্রী।ভবনে ফাটল ধরার পর ঝুঁকি জেনেও ঘটনার দিন শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
‘যুবলীগ নেতা’ রানার নামে সেই পোস্টার
সাভারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের ঘনিষ্ঠ সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, অবৈধভাবে জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এলাকায়।
রানা প্লাজা ধসের কয়েক মাস আগেও সাভার এলাকা পোস্টারে ছেয়ে ফেলেন রানা; সেখানে তার পরিচয় লেখা হয় সাভার পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ জংয়ের ছবিও সেখানে ছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মুরাদ জংয়ের মদদেই মাদক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে অর্থশালী হয়ে ওঠেন রানা; যদিও মুরাদ জং তা বরাবরই নাকচ করে এসেছেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সে সময় দাবি করেছিলেন, রানা তাদের কেউ নন। তবে পরে ‘বিতর্কের অবসান ঘটাতে’ সাভার থানা ও পৌর যুবলীগের সেই কমিটিই বিলুপ্ত করা হয়েছিল।
বিচারককে আইন দেখালেন আসামি রানা!
Reviewed by প্রভাত ফেরি
on
August 31, 2017
Rating: 5

No comments