মিয়ানমারের রাখাইনে রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর কর্তৃক দমন-পীড়নের শিকার হয়ে
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কয়েকশ হিন্দু ভারতে আশ্রয় চাইছেন। এ বিষয়ে তারা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গতকাল
বুধবার
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মিয়ানমারে পুলিশ ও সেনাচৌকিতে গত ২৫ আগস্ট জঙ্গি হামলার অজুহাতে ব্যাপক
সেনা অভিযান চালায় বর্মি সেনারা। জাতিসংঘ যাকে বর্ণনা করছে ‘জাতিগত নিধন’
হিসেবে। মিয়ানমার সেনাদের বর্বরোচিত নির্যাতনের মুখে এই কয়দিনে বাংলাদেশে
শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। ওই
বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে প্রায় ৫০০ হিন্দুও
বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। নতুন করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের থেকে
একটু দূরে একটি মুরগির খামার খালি সরিয়ে তাদের সেখানে থাকার সুযোগ করে
দেওয়া হয়েছে।
এসব হিন্দু শরণার্থী জানিয়েছেন, তারা বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের
রাখাইন রাজ্যে তাদের গ্রামে ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আবার মুসলিম সংখ্যগরিষ্ঠ
বাংলাদেশে থাকতেও তারা ভয় পাচ্ছেন।
নিরঞ্জন রুদ্র নামে খামারে আশ্রয় নেওয়া এক হিন্দু বলেন, ভারত হিন্দুস্তান
হিসেবেও পরিচিত, যা হিন্দুদের ভূমি। আমরা বেশি কিছু আশা করছি না, ভারতে
¯্রফে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে চাই। আমরা সেটি মিয়ানমার অথবা এখানে নাও
পেতে পারি। ক্যাম্পে থাকা অন্য হিন্দুরাও জানালেনÑ তারা গণমাধ্যমের মাধ্যমে
বিষয়টি ভারত সরকারের নজরে আনতে চান। ভারতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর
সেখানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং
অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
হিন্দু শরণার্থীদের এ আশার বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা
হয়নি। তবে একটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভারত থেকে ফেরত
পাঠানোর বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টে একটি আবেদনের শুনানি চলছে। সরকার আদালতের
সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। তবে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের আদর্শগত অংশীদার
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জ্যেষ্ঠ নেতা অচিন্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন, মিয়ানমার
থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুদের স্বাভাবিক গন্তব্য ভারত।
No comments