আজ দুর্গোৎসবের শেষ দিন।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ-উদ্দীপনা ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে গতকাল পালিত হলো শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমী। আজ দুর্গোৎসবের শেষ দিন। পালিত হবে বিজয়া দশমী। দেবী দুর্গা মর্ত্য থেকে আবারও কৈলাশে ফিরে যাবেন। সন্ধ্যায় হবে প্রতিমা বিসর্জন। গতকাল সকালে সারা দেশের পূজা মণ্ডপগুলোয় মহানবমী বিহিত পূজা প্রশস্তা ও ব্রতোপবাস অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্র ও চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করা হয়। পূজা শেষে মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন ভক্তরা। সাধারণত মহা অষ্টমীর শেষ এবং মহানবমী তিথির সংযুক্ত সময়ে সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ কারণে সন্ধিপূজা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সন্ধিক্ষণেই দেবী দুর্গার হাতে অসুর বধ হয়েছিল।
গতকাল রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালীমন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, বনানী পূজামণ্ডপ, সিদ্ধেশ্বরী কালিমন্দির, শাঁখারীবাজার ও তাঁতীবাজার, খামারবাড়ী পূজামণ্ডপ, ডেমরার দেইল্যা পূর্বপাড়া পূজামণ্ডপসহ সারা দেশের পূজামণ্ডপগুলোয় বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ভক্তরা ভিড় করেছে মন্দিরে মন্দিরে। চারদিকে শোনা গেছে চণ্ডীপাঠ, উলুধ্বনি, ঢাকের বোল আর জয় মা দুর্গা জয়ধ্বনি। দলে দলে বিভিন্ন বয়সী মানুষ মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ায়। একে অপরের সঙ্গে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। দুর্গা দেবীকে বিদায় জানানোর আগে শেষবারের মতো আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠেছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তবে আনন্দের মধ্যেও ছিল কিছুটা বিষাদের সুর। কারণ আজই দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিতে হবে। আজ দুর্গোৎসবের শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সকালে দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে। এরপর শোভাযাত্রাসহকারে অশ্রুসিক্ত চেখে প্রতিমা বিসর্জন করা হবে। এভাবেই শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হবে। ভাঙবে পাঁচদিনের মিলনমেলা।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। এ উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পক্ষ থেকে আজ বিকালে বিজয়া দশমীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হবে। শাস্ত্র মতে, দুর্গোৎসবের ষষ্ঠী থেকে মহানবমী পর্যন্ত প্রতিমার পূজা করা হয়। তবে বিজয়া দশমীর দিন বিসর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিমাকে নিরাকার করা হয়। দেবী তখন আবার ভক্তদের হৃদয়ে আসন নেন। পৃথিবী আসুরিক শক্তিমুক্ত হয় বলে সবাই তখন আনন্দ আলিঙ্গন করেন। হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবাই বিজয়ার আনন্দ উপভোগ করেন। শাস্ত্রমতে, বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়েই মা দুর্গা তার সন্তান কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীসহ কৈলাশে স্বামীর গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন।
No comments