আমাদের উৎসব: অর্ধেক হর্ষ, অর্ধেক বিষাদ
সৈয়দ জাহিদ হাসান
বাঙালি উৎসবের সুঘ্রাণ পেলে দুঃখ-কষ্ট সব ভুলে যায়। সবকিছুর পরও উৎসব-অনুরাগী বাঙালি উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙাতে ভীষণ ভালোবাসে। ধর্মীয় উৎসব, সামাজিক উৎসব, রাষ্ট্রীয় উৎসব_ যে কোনো উৎসবেই বাঙালি তার মনকাননের আনন্দ কুসুমকে বিকশিত করতে উন্মুখ, উৎসাহী। বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। বারো মাসে তেরো পার্বণ আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্যের বিশেষ পরিচিতি। যে কোনো উৎসবে বাঙালির অংশগ্রহণ প্রাণবন্ত ও স্বতঃস্ফূর্ত। উৎসব এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে সাড়া পড়ে যায়। প্রাণে প্রাণে জাগে অসীম আনন্দ। উৎসবের চারিত্রিক লক্ষণের সঙ্গে আনন্দের যোগ সুপ্রাচীন। তবে উৎসবের আনন্দ কখনো কখনো বিষাদেও রূপ নেয়। সেই বিষাদ আবার রূপান্তরিত হয় বিক্ষোভে। বাঙালির অনেক উৎসবের গায়েই লেগে আছে রক্তের দাগ, অশ্রুর আল্পনা।
পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব। এই উৎসবে গ্রাম থেকে শহর_ সবখানেই লাগে রঙের ছোঁয়া। ছেলে-বুড়ো সকলেই পহেলা বৈশাখে নিজেকে সাজায় নতুন রঙে। নতুন রঙের সঙ্গে নতুন স্বপ্নও জন্ম নেয় মুগ্ধ মনের ছোট্ট ঘরে। বৈশাখের মেলা শুধু মেলাই নয়, এটা যেন বাঙালির অবাধ মেলামেশার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অঘোষিত তীর্থস্থান। বৈশাখী মেলায় বাঙালির প্রাণের আবেগ পরস্পরের সঙ্গে একাত্ম হয় বলেই নয়, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-েও এর অবদান স্বীকার্য। কুটির শিল্পের উৎপাদন ও বিপণনে বৈশাখী উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধগোষ্ঠীর কালো থাবা থেকে বিমল বৈশাখী উৎসবকে আমরা নিরাপদ রাখতে পারিনি। বোমা হামলায় আমাদের স্বজনদের রক্ত ঝরেছে বৈশাখে। উৎসব থেকে বাঙালিকে উৎসববিমুখ করার অপচেষ্টা করেছে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। এখনকার দিনে বৈশাখ শুধু আনন্দ নিয়েই আসে না, সঙ্গে করে সে নিয়ে আসে বিষাদের স্মৃতিমালা।
বাংলাদেশের অসংখ্য বিজয় উৎসব আছে। শান্তিপ্রিয়, নিরীহ বাঙালি জাতি ভিনদেশি শোষক ও দুঃশাসকদের বারবার পরাজিত করেছে। আমরা ভাষা আন্দোলনে বিজয়ী জাতি। মুক্তিসংগ্রামে সর্বাধিক রক্ত ও জীবন বিসর্জনকারী। অতঃপর বিজয়ী। আমাদের এই সব বিজয় উৎসব এখন বিষাদময়। প্রাণ খুলে এসব উৎসবে যোগ দেওয়া যায় না। আতঙ্ক থাকে সবার মনে। থাকে নির্দিষ্ট সময় পরে উৎসবস্থল ত্যাগ করার সরকারি নির্দেশ। কয়েক বছর আগেও এত আতঙ্ক আর নিয়ম ছিল না উৎসব উদযাপনে। যতই দিন যাচ্ছে ততই উৎসব ঘিরে তৈরি হচ্ছে বিধি ও বিষাদের বলয়।
বাংলাদেশ সর্বধর্মের স্বর্গভূমি হলেও এখানে মুসলমানদের সংখ্যা সর্বাধিক। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান দেশে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা দুটি বৃহৎ ধর্মোৎসব পালন করে থাকে। এই দুটি ধর্মোৎসবকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মানুষের বাঁধভাঙা ঢল নামে। স্বজন সনি্নধানে, নাড়ির টানে মানুষ ছুটে চলে শাখা থেকে শেকড়ে। ঈদ উৎসবে ঘরমুখী মানুষের নানাবিধ ভোগান্তি আগেও ছিল এখনও আছে। এই ভোগান্তি কখনো শেষ হবে বলে মনে হয় না। কেননা যতই দিন যাচ্ছে ততই মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একটা সমস্যা না, কমে যদি উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই পেতে থাকে তাহলে হতাশ হওয়া ছাড়া মানুষের আর কিছু করার থাকে না।
ঈদ যাত্রার প্রথম সমস্যা পরিবহন সঙ্কট। কর্মব্যস্ত নাগরিক মানুষ যখন বছরান্তে ঘরে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নেয়, তখন পরিবহনের টিকিট পেতে তাকে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়। আমরা ঘরমুখী টিকিটপ্রত্যাশী মানুষগুলোকে যখন ট্রেন স্টেশন, বাস কাউন্টার কিংবা লঞ্চঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা করুণ মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি তখন মনটা বিষাদে ভরে যায়। টিকিট যদিও বা কারো কারো ভাগ্যে নিয়মিত ভাড়ার দেড় গুণ, দ্বিগুণ, আড়াইগুণ মূল্যে মিলে, যাত্রার সময় আবার মানুষকে নির্ধারিত পরিবহনের জন্য দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করতে হয়। কেন এই বিরক্তিকর প্রতীক্ষা? কারণ রাস্তাঘাট চলার অনুপযোগী, ভয়াবহ যানজট, পথে পথে নানাবিধ হয়রানি। এতসব ঝামেলা সামলিয়ে মানুষ যখন বাড়ি পেঁৗছায় তখন পূর্ণাঙ্গ আনন্দ খ-িত হয়ে যায়। সেই খ-িত অংশ পরিণত হয় বিষাদে।
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে কত নাজুক অবস্থায় আছে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে। ১২ আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫.৩০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর থেকে বিআরটিসি এসি বাসে উঠি আমার কর্মস্থল কুমিল্লায় আসার উদ্দেশে। কাঁচপুর ব্রিজ পার হওয়ার পরেই গাড়ি জ্যামের মুখোমুখি হয়। জ্যাম আস্তে আস্তে রূপ নেয় ভয়াবহ জ্যামে। মেঘনা ব্রিজের ওপর বাস-ট্রাক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল বলেই সেদিন জ্যাম হয়েছে। যা হোক, রাত আড়াইটায় ওই দিন আমি কুমিল্লা পেঁৗছতে সক্ষম হই। ঢাকা থেকে ফরিদপুরে আমার গ্রামের বাড়ি আসার পথে ফেরি ঘাটে ১২ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা অপেক্ষার অভিজ্ঞতা এ জীবনে আমার বহুবার হয়েছে। স্ত্রী-পরিবার নিয়ে রাস্তার মধ্যে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা যে কী ভয়াবহ ব্যাপার তা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এর পর রয়েছে সড়ক, রেল ও নৌ-দুর্ঘটনায় প্রাণহানির বেদনা। উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে প্রতি বছরই বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মুখোমুখি হচ্ছে অপ্রত্যাশিত বেদনার। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি রোধ করাও এখন সময়ের দাবি হয়ে সামনে এসেছে।
বাঙালি উৎসবের সুঘ্রাণ পেলে দুঃখ-কষ্ট সব ভুলে যায়। সবকিছুর পরও উৎসব-অনুরাগী বাঙালি উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙাতে ভীষণ ভালোবাসে। ধর্মীয় উৎসব, সামাজিক উৎসব, রাষ্ট্রীয় উৎসব_ যে কোনো উৎসবেই বাঙালি তার মনকাননের আনন্দ কুসুমকে বিকশিত করতে উন্মুখ, উৎসাহী।
বাঙালির উৎসব-আনন্দ খ-িত না হয়ে পূর্ণতা পাক। অর্ধেক আনন্দ আর অর্ধেক বিষাদ নয়_ আমাদের আনন্দ পুরোটাই আমাদের হোক। এই জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার সেসব পদক্ষেপ রাষ্ট্র গ্রহণ করবে এমনটিই সবাই প্রত্যাশা করে।
সৈয়দ জাহিদ হাসান: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
বাঙালি উৎসবের সুঘ্রাণ পেলে দুঃখ-কষ্ট সব ভুলে যায়। সবকিছুর পরও উৎসব-অনুরাগী বাঙালি উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙাতে ভীষণ ভালোবাসে। ধর্মীয় উৎসব, সামাজিক উৎসব, রাষ্ট্রীয় উৎসব_ যে কোনো উৎসবেই বাঙালি তার মনকাননের আনন্দ কুসুমকে বিকশিত করতে উন্মুখ, উৎসাহী। বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। বারো মাসে তেরো পার্বণ আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্যের বিশেষ পরিচিতি। যে কোনো উৎসবে বাঙালির অংশগ্রহণ প্রাণবন্ত ও স্বতঃস্ফূর্ত। উৎসব এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে সাড়া পড়ে যায়। প্রাণে প্রাণে জাগে অসীম আনন্দ। উৎসবের চারিত্রিক লক্ষণের সঙ্গে আনন্দের যোগ সুপ্রাচীন। তবে উৎসবের আনন্দ কখনো কখনো বিষাদেও রূপ নেয়। সেই বিষাদ আবার রূপান্তরিত হয় বিক্ষোভে। বাঙালির অনেক উৎসবের গায়েই লেগে আছে রক্তের দাগ, অশ্রুর আল্পনা।
পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব। এই উৎসবে গ্রাম থেকে শহর_ সবখানেই লাগে রঙের ছোঁয়া। ছেলে-বুড়ো সকলেই পহেলা বৈশাখে নিজেকে সাজায় নতুন রঙে। নতুন রঙের সঙ্গে নতুন স্বপ্নও জন্ম নেয় মুগ্ধ মনের ছোট্ট ঘরে। বৈশাখের মেলা শুধু মেলাই নয়, এটা যেন বাঙালির অবাধ মেলামেশার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অঘোষিত তীর্থস্থান। বৈশাখী মেলায় বাঙালির প্রাণের আবেগ পরস্পরের সঙ্গে একাত্ম হয় বলেই নয়, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-েও এর অবদান স্বীকার্য। কুটির শিল্পের উৎপাদন ও বিপণনে বৈশাখী উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধগোষ্ঠীর কালো থাবা থেকে বিমল বৈশাখী উৎসবকে আমরা নিরাপদ রাখতে পারিনি। বোমা হামলায় আমাদের স্বজনদের রক্ত ঝরেছে বৈশাখে। উৎসব থেকে বাঙালিকে উৎসববিমুখ করার অপচেষ্টা করেছে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। এখনকার দিনে বৈশাখ শুধু আনন্দ নিয়েই আসে না, সঙ্গে করে সে নিয়ে আসে বিষাদের স্মৃতিমালা।
বাংলাদেশের অসংখ্য বিজয় উৎসব আছে। শান্তিপ্রিয়, নিরীহ বাঙালি জাতি ভিনদেশি শোষক ও দুঃশাসকদের বারবার পরাজিত করেছে। আমরা ভাষা আন্দোলনে বিজয়ী জাতি। মুক্তিসংগ্রামে সর্বাধিক রক্ত ও জীবন বিসর্জনকারী। অতঃপর বিজয়ী। আমাদের এই সব বিজয় উৎসব এখন বিষাদময়। প্রাণ খুলে এসব উৎসবে যোগ দেওয়া যায় না। আতঙ্ক থাকে সবার মনে। থাকে নির্দিষ্ট সময় পরে উৎসবস্থল ত্যাগ করার সরকারি নির্দেশ। কয়েক বছর আগেও এত আতঙ্ক আর নিয়ম ছিল না উৎসব উদযাপনে। যতই দিন যাচ্ছে ততই উৎসব ঘিরে তৈরি হচ্ছে বিধি ও বিষাদের বলয়।
বাংলাদেশ সর্বধর্মের স্বর্গভূমি হলেও এখানে মুসলমানদের সংখ্যা সর্বাধিক। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান দেশে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা দুটি বৃহৎ ধর্মোৎসব পালন করে থাকে। এই দুটি ধর্মোৎসবকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মানুষের বাঁধভাঙা ঢল নামে। স্বজন সনি্নধানে, নাড়ির টানে মানুষ ছুটে চলে শাখা থেকে শেকড়ে। ঈদ উৎসবে ঘরমুখী মানুষের নানাবিধ ভোগান্তি আগেও ছিল এখনও আছে। এই ভোগান্তি কখনো শেষ হবে বলে মনে হয় না। কেননা যতই দিন যাচ্ছে ততই মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একটা সমস্যা না, কমে যদি উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই পেতে থাকে তাহলে হতাশ হওয়া ছাড়া মানুষের আর কিছু করার থাকে না।
ঈদ যাত্রার প্রথম সমস্যা পরিবহন সঙ্কট। কর্মব্যস্ত নাগরিক মানুষ যখন বছরান্তে ঘরে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নেয়, তখন পরিবহনের টিকিট পেতে তাকে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়। আমরা ঘরমুখী টিকিটপ্রত্যাশী মানুষগুলোকে যখন ট্রেন স্টেশন, বাস কাউন্টার কিংবা লঞ্চঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা করুণ মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি তখন মনটা বিষাদে ভরে যায়। টিকিট যদিও বা কারো কারো ভাগ্যে নিয়মিত ভাড়ার দেড় গুণ, দ্বিগুণ, আড়াইগুণ মূল্যে মিলে, যাত্রার সময় আবার মানুষকে নির্ধারিত পরিবহনের জন্য দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করতে হয়। কেন এই বিরক্তিকর প্রতীক্ষা? কারণ রাস্তাঘাট চলার অনুপযোগী, ভয়াবহ যানজট, পথে পথে নানাবিধ হয়রানি। এতসব ঝামেলা সামলিয়ে মানুষ যখন বাড়ি পেঁৗছায় তখন পূর্ণাঙ্গ আনন্দ খ-িত হয়ে যায়। সেই খ-িত অংশ পরিণত হয় বিষাদে।
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে কত নাজুক অবস্থায় আছে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে। ১২ আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫.৩০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর থেকে বিআরটিসি এসি বাসে উঠি আমার কর্মস্থল কুমিল্লায় আসার উদ্দেশে। কাঁচপুর ব্রিজ পার হওয়ার পরেই গাড়ি জ্যামের মুখোমুখি হয়। জ্যাম আস্তে আস্তে রূপ নেয় ভয়াবহ জ্যামে। মেঘনা ব্রিজের ওপর বাস-ট্রাক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল বলেই সেদিন জ্যাম হয়েছে। যা হোক, রাত আড়াইটায় ওই দিন আমি কুমিল্লা পেঁৗছতে সক্ষম হই। ঢাকা থেকে ফরিদপুরে আমার গ্রামের বাড়ি আসার পথে ফেরি ঘাটে ১২ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা অপেক্ষার অভিজ্ঞতা এ জীবনে আমার বহুবার হয়েছে। স্ত্রী-পরিবার নিয়ে রাস্তার মধ্যে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা যে কী ভয়াবহ ব্যাপার তা ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এর পর রয়েছে সড়ক, রেল ও নৌ-দুর্ঘটনায় প্রাণহানির বেদনা। উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে প্রতি বছরই বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মুখোমুখি হচ্ছে অপ্রত্যাশিত বেদনার। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি রোধ করাও এখন সময়ের দাবি হয়ে সামনে এসেছে।
বাঙালি উৎসবের সুঘ্রাণ পেলে দুঃখ-কষ্ট সব ভুলে যায়। সবকিছুর পরও উৎসব-অনুরাগী বাঙালি উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙাতে ভীষণ ভালোবাসে। ধর্মীয় উৎসব, সামাজিক উৎসব, রাষ্ট্রীয় উৎসব_ যে কোনো উৎসবেই বাঙালি তার মনকাননের আনন্দ কুসুমকে বিকশিত করতে উন্মুখ, উৎসাহী।
বাঙালির উৎসব-আনন্দ খ-িত না হয়ে পূর্ণতা পাক। অর্ধেক আনন্দ আর অর্ধেক বিষাদ নয়_ আমাদের আনন্দ পুরোটাই আমাদের হোক। এই জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার সেসব পদক্ষেপ রাষ্ট্র গ্রহণ করবে এমনটিই সবাই প্রত্যাশা করে।
সৈয়দ জাহিদ হাসান: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
No comments