মগদের সন্তান উৎপাদনের জন্য রোহিঙ্গা যুবতীদের নিয়ে যায়।
বর্মি সেনা আর নাডালা বাহিনীর সদস্যরা কোনো রোহিঙ্গা পাড়ায় যখন ঢোকে তখন
সেখানে তাণ্ডব শুরু হয়ে যায়।
তাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গা যুবকেরা। যুবকদের তারা হত্যা করে, বয়স্ক ও শিশুদের বসিয়ে রাখে, আর যুবতীদের ধরে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। এই তরুণীদের দুর্গম এলাকার সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তারা।
মংডুর জীবনখালীর আনিসুল মুস্তাফার ছেলে শহর মূলক (২৫)। বর্মি সেনাবাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে আশ্রয়ের জন্য এসেছেন টেকনাফের লম্বাবিল এলাকায়। লম্বাবিল প্রধান সড়ক হয়ে পায়ে হাঁটা রাস্তায় প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নাফ নদীর সীমান্তে গত ১৫ সেপ্টেম্বর কথা হয় এই শহর মূলকের সাথে। তিনি বলেন, বর্মি বাহিনীর অত্যাচার তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। যখন বর্মি সেনা ও নাডালা বাহিনীর সদস্যরা কোনো এলাকায় প্রবেশ করে তখন ওই এলাকায় তাণ্ডব শুরু হয়ে যায়। পাড়ার সবাই তখন দৌড়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় থাকেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই হতাহত হন। যাদের ধরতে পারে তাদের মধ্যে যুবকদের সাথে সাথে গুলি করে এবং গলা কেটে হত্যা করে বর্মি বাহিনী ও নাডালা বাহিনীর সদস্যরা। অবিবাহিতা যুবতীদের ধরে গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। আর বয়স্ক ও শিশুদের বসিয়ে রাখে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা চলে গেলে বয়স্ক ও শিশুরা তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য পালিয়ে আশপাশের ঝোপজঙ্গলে চলে যায়। এরপর সেখান থেকে চলে আসে বাংলাদেশ সীমানায়। মংডুর বলি বাজার এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে নবী হোসেন বলেন, যুবকদের মধ্যে কেউ রক্ষা পায়নি। তাদের খুঁজে খুঁঁজে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ১৩ বছর থেকে ৩৫ বছরের যারা ছিল তাদের বেশির ভাগই বর্মি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। নবী হোসেন বলেন, যুবতীদের যে শুধু ধর্ষণ করেছে তাই নয়, তাদের দুর্গম এলাকার সেনা ক্যাম্পে সাপ্লাই দেয়া হয়। সেখানে বর্মি সেনাদের মনোরঞ্জনের জন্য তাদের ব্যবহার করা হয় বলে নবী হোসেন বলেন। তবে এর চেয়েও ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন ওই একই এলাকার নুর হাসিম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা যুবতীদের যে শুধু ধর্ষণ আর সেনাদের মনোরঞ্জনের জন্য নেয়া হয়েছে তাই নয়। অনেক সুন্দরী যুবতীকে ধরে নেয়া হয়েছে মগদের সন্তান উৎপাদনের জন্য। নুর হাসিম বলেন, মগদের সন্তান কম হয়ে থাকে। সাধারণত তিনটির উপরে কোনো মগ নারী সন্তান ধারণ করতে পারে না। সেখানে একজন রোহিঙ্গা নারী অনেকগুলো সন্তান ধারণে সক্ষম। নুর হাসিম বলেন, ওই সব সুন্দরী যুবতীদের ধরে নিয়ে যায় মগদের সন্তান ধারণের জন্য। সরকারিভাবে সেখানে ওই সব সন্তানকে বৌদ্ধ হিসেবে লালন পালন করা হয়।
মংডুর হাইছ সুরতা এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে সেলিম উল্লাহ (৫০)। তিনি বলেন, তার পাড়ার কোনো যুবক ছেলের জীবন বাঁচেনি। তার পরিবারে ১১ জন সদস্যের মধ্যে নারী-শিশুসহ ৯ জনকে নিয়ে তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। উপার্জনক্ষম দুই সন্তান রেদওয়ান (২০) ও আনসার উল্লাহকে (১৮) বর্মি বাহিনী গুলি করে হত্যা করে। সেলিম উল্লাহ বলেন, সেনাবাহিনী ও নাডালা বাহিনীর সদস্যরা গুলি করতে করতে তাদের পাড়ায় প্রবেশ করে। এ সময় তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে নারী-শিশু ও বয়স্কদের একটি স্থানে বসিয়ে রাখে। তাদের মধ্যে যেসব তরুণীকে পছন্দ হয় তাদের ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠায়।
আর তার দুই ছেলে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ধরে প্রথমে গুলি করে এবং পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটে। ওই পাড়ারই শিল কুয়ায় (খাবার পানির কূপ) তাদের লাশ ফেলে দেয়া হয়। সেলিম উল্লাহ বলেন, ওই কুয়ায় তাদেরই চোখের সামনে আরো অন্তত ৩০ জনের লাশ ফেলতে দেখেছেন।
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিন : মিয়ানমারকে জাতিসঙ্ঘ
বিবিসি
বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেছেন ,মিয়ানমারের উচিৎ কফি আনান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া।
রাখাইনে জরুরিভিত্তিতে সহিংসতা বন্ধের দাবিও করেছেন তিনি।
ইউএনএইচসিআর প্রধান রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে আজ (সোমবার) ঢাকার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যখন শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে।
কক্সবাজার এবং বান্দরবানের যে সব জায়গায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন ফিলিপো গ্র্যান্ডি।
তিনি বলেন, যেকোনো ত্রাণ কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কল্যাণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
"স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর বড় ধরণের চাপ তৈরি হয়েছে। সুতরাং শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের কথা ভাবলে চলবে না। স্থানীয়দের নিরাপত্তা, তাদের ঘরবাড়ি, জমাজমি এবং পরিবেশের বিষয়টি সমস্ত পরিকল্পনায় গুরুত্ব পাওয়া দরকার।"
ত্রাণ সাহায্যে কি পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন- এই প্রশ্নে ইউএনএইচসিআর প্রধান বলেন, ৭৪ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ প্রয়োজন।
বাসস
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে প্রভাবিত করার আশ্বাস চীনের
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দেশটিকে প্রভাবিত করার আশ্বাস দিয়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।
সফররত আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে চীনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার লি জুন এই আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে তিনি বলেন, ‘চীন সরকার মিয়ানমারকে প্রভাবিত করবে যেন তারা বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসে। চীন মনে করে এই অঞ্চলে শান্তির জন্য মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গা সমস্যায় স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো উচিত।’
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া টেলিফোনে এ কথা জানিয়েছেন। বৈঠকে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান।
বৈঠকে ফারুক খান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি চলমান রোহিঙ্গা সংকটের বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গাদের উপর পরিচালিত বর্বরতা ও নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য চীন সরকারে সহযোগিতা কামনা করেন। একই সাথে নেতৃবৃন্দ রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য চীন সরকারকে কার্যকরি ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
জবাবে চীনের ভাইস মিনিস্টার লি জুন বলেন, তারা রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত রয়েছেন। তারা এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য মিয়ানমার সরকারকে বলেছেন। বাংলাদেশের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার জন্য আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য মিয়ানমার সরকারকে প্রভাবিত করবে বলেও জানান তিনি।
চীনের ভাইস মিনিস্টার জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মানবিক আচারণের প্রতি আমাদের সন্মান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন মানোবিক উদ্যোগের প্রতি সন্মান জানিয়ে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ পাঠানো হবে। ত্রাণের মধ্যে থাকবে কম্বল এবং তাঁবু।
চীন জানিয়েছে, তাদের সহায়তা চলমান থাকবে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সাথে মিয়ানমার ফিরে যেতে পারে এজন্য তারা আন্তরিকভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক শ. ম. রেজাউল করিম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নজিবুল্লাহ হিরু, রিয়াজুল কবির কাওসার, দিপংকর তালুকদার ও উপধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং।
তাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গা যুবকেরা। যুবকদের তারা হত্যা করে, বয়স্ক ও শিশুদের বসিয়ে রাখে, আর যুবতীদের ধরে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। এই তরুণীদের দুর্গম এলাকার সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তারা।
মংডুর জীবনখালীর আনিসুল মুস্তাফার ছেলে শহর মূলক (২৫)। বর্মি সেনাবাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে আশ্রয়ের জন্য এসেছেন টেকনাফের লম্বাবিল এলাকায়। লম্বাবিল প্রধান সড়ক হয়ে পায়ে হাঁটা রাস্তায় প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নাফ নদীর সীমান্তে গত ১৫ সেপ্টেম্বর কথা হয় এই শহর মূলকের সাথে। তিনি বলেন, বর্মি বাহিনীর অত্যাচার তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। যখন বর্মি সেনা ও নাডালা বাহিনীর সদস্যরা কোনো এলাকায় প্রবেশ করে তখন ওই এলাকায় তাণ্ডব শুরু হয়ে যায়। পাড়ার সবাই তখন দৌড়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় থাকেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই হতাহত হন। যাদের ধরতে পারে তাদের মধ্যে যুবকদের সাথে সাথে গুলি করে এবং গলা কেটে হত্যা করে বর্মি বাহিনী ও নাডালা বাহিনীর সদস্যরা। অবিবাহিতা যুবতীদের ধরে গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। আর বয়স্ক ও শিশুদের বসিয়ে রাখে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা চলে গেলে বয়স্ক ও শিশুরা তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য পালিয়ে আশপাশের ঝোপজঙ্গলে চলে যায়। এরপর সেখান থেকে চলে আসে বাংলাদেশ সীমানায়। মংডুর বলি বাজার এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে নবী হোসেন বলেন, যুবকদের মধ্যে কেউ রক্ষা পায়নি। তাদের খুঁজে খুঁঁজে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ১৩ বছর থেকে ৩৫ বছরের যারা ছিল তাদের বেশির ভাগই বর্মি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। নবী হোসেন বলেন, যুবতীদের যে শুধু ধর্ষণ করেছে তাই নয়, তাদের দুর্গম এলাকার সেনা ক্যাম্পে সাপ্লাই দেয়া হয়। সেখানে বর্মি সেনাদের মনোরঞ্জনের জন্য তাদের ব্যবহার করা হয় বলে নবী হোসেন বলেন। তবে এর চেয়েও ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন ওই একই এলাকার নুর হাসিম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা যুবতীদের যে শুধু ধর্ষণ আর সেনাদের মনোরঞ্জনের জন্য নেয়া হয়েছে তাই নয়। অনেক সুন্দরী যুবতীকে ধরে নেয়া হয়েছে মগদের সন্তান উৎপাদনের জন্য। নুর হাসিম বলেন, মগদের সন্তান কম হয়ে থাকে। সাধারণত তিনটির উপরে কোনো মগ নারী সন্তান ধারণ করতে পারে না। সেখানে একজন রোহিঙ্গা নারী অনেকগুলো সন্তান ধারণে সক্ষম। নুর হাসিম বলেন, ওই সব সুন্দরী যুবতীদের ধরে নিয়ে যায় মগদের সন্তান ধারণের জন্য। সরকারিভাবে সেখানে ওই সব সন্তানকে বৌদ্ধ হিসেবে লালন পালন করা হয়।
মংডুর হাইছ সুরতা এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে সেলিম উল্লাহ (৫০)। তিনি বলেন, তার পাড়ার কোনো যুবক ছেলের জীবন বাঁচেনি। তার পরিবারে ১১ জন সদস্যের মধ্যে নারী-শিশুসহ ৯ জনকে নিয়ে তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। উপার্জনক্ষম দুই সন্তান রেদওয়ান (২০) ও আনসার উল্লাহকে (১৮) বর্মি বাহিনী গুলি করে হত্যা করে। সেলিম উল্লাহ বলেন, সেনাবাহিনী ও নাডালা বাহিনীর সদস্যরা গুলি করতে করতে তাদের পাড়ায় প্রবেশ করে। এ সময় তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে নারী-শিশু ও বয়স্কদের একটি স্থানে বসিয়ে রাখে। তাদের মধ্যে যেসব তরুণীকে পছন্দ হয় তাদের ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠায়।
আর তার দুই ছেলে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ধরে প্রথমে গুলি করে এবং পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটে। ওই পাড়ারই শিল কুয়ায় (খাবার পানির কূপ) তাদের লাশ ফেলে দেয়া হয়। সেলিম উল্লাহ বলেন, ওই কুয়ায় তাদেরই চোখের সামনে আরো অন্তত ৩০ জনের লাশ ফেলতে দেখেছেন।
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিন : মিয়ানমারকে জাতিসঙ্ঘ
বিবিসি
বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেছেন ,মিয়ানমারের উচিৎ কফি আনান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া।
রাখাইনে জরুরিভিত্তিতে সহিংসতা বন্ধের দাবিও করেছেন তিনি।
ইউএনএইচসিআর প্রধান রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে আজ (সোমবার) ঢাকার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যখন শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে।
কক্সবাজার এবং বান্দরবানের যে সব জায়গায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে সেখানকার স্থানীয় বাংলাদেশীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন ফিলিপো গ্র্যান্ডি।
তিনি বলেন, যেকোনো ত্রাণ কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কল্যাণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
"স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর বড় ধরণের চাপ তৈরি হয়েছে। সুতরাং শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের কথা ভাবলে চলবে না। স্থানীয়দের নিরাপত্তা, তাদের ঘরবাড়ি, জমাজমি এবং পরিবেশের বিষয়টি সমস্ত পরিকল্পনায় গুরুত্ব পাওয়া দরকার।"
ত্রাণ সাহায্যে কি পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন- এই প্রশ্নে ইউএনএইচসিআর প্রধান বলেন, ৭৪ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ প্রয়োজন।
বাসস
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে প্রভাবিত করার আশ্বাস চীনের
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দেশটিকে প্রভাবিত করার আশ্বাস দিয়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।
সফররত আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে চীনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার লি জুন এই আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে তিনি বলেন, ‘চীন সরকার মিয়ানমারকে প্রভাবিত করবে যেন তারা বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসে। চীন মনে করে এই অঞ্চলে শান্তির জন্য মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গা সমস্যায় স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো উচিত।’
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া টেলিফোনে এ কথা জানিয়েছেন। বৈঠকে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান।
বৈঠকে ফারুক খান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি চলমান রোহিঙ্গা সংকটের বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গাদের উপর পরিচালিত বর্বরতা ও নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য চীন সরকারে সহযোগিতা কামনা করেন। একই সাথে নেতৃবৃন্দ রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য চীন সরকারকে কার্যকরি ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
জবাবে চীনের ভাইস মিনিস্টার লি জুন বলেন, তারা রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত রয়েছেন। তারা এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য মিয়ানমার সরকারকে বলেছেন। বাংলাদেশের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার জন্য আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য মিয়ানমার সরকারকে প্রভাবিত করবে বলেও জানান তিনি।
চীনের ভাইস মিনিস্টার জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মানবিক আচারণের প্রতি আমাদের সন্মান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন মানোবিক উদ্যোগের প্রতি সন্মান জানিয়ে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ পাঠানো হবে। ত্রাণের মধ্যে থাকবে কম্বল এবং তাঁবু।
চীন জানিয়েছে, তাদের সহায়তা চলমান থাকবে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সাথে মিয়ানমার ফিরে যেতে পারে এজন্য তারা আন্তরিকভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক শ. ম. রেজাউল করিম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নজিবুল্লাহ হিরু, রিয়াজুল কবির কাওসার, দিপংকর তালুকদার ও উপধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং।
No comments