বাশারকে টপকাতে পারবেন মুশফিক!
বাশারকে টপকাতে পারবেন মুশফিক!
বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ষষ্ঠবারের মতো টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হচ্ছে দু’দল। আগের ৫টি টেস্ট সিরিজের ৪টিতে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টির কারণে একটি টেস্ট সিরিজ ড্র হয়। বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের দিকে চোখ বুলানো যাক।
বাংলাদেশের পক্ষে : দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ ম্যাচে ৩০১ রান করেছেন সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এটিই টাইগারদের সর্বোচ্চ রান। ৬ ম্যাচে ২৩৮ রান করেছেন বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ফলে তার সামনে বাশারকে টপকানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এরপরই আছেন ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকী। ৪ ম্যাচে ২১১ রান করেছেন তিনি।
হাবিবুল-মুশফিকুর-জুনায়েদ, প্রত্যেকেই দু’টি করে হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ৬ ম্যাচে ২০৩ রান করে এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া টেস্ট সিরিজে বিশ্রামে থাকা সাকিব আল হাসান। ৬ ম্যাচে ১৭৬ নিয়ে এরপরই আছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। সাকিব বা অ্যাশের কেউই কোন হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে : বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তো বটেই, দু’দলের মধ্যে সর্বোচ্চ রান প্রোটিয়াদের সাবেক অধিনায়ক গ্রায়াম স্মিথের। ৮ ম্যাচের ৯ ইনিংসে ৩টি সেঞ্চুরি ও ১টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৭৪৩ রান করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ২৩২ রান।
১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬ ম্যাচে ৩১৭ রান নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দ্বিতীয় অলরাউন্ডার জক ক্যালিস। এরপরই আছেন ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী ভারতের কোচ থাকা গ্যারি কারর্স্টেন। ২টি সেঞ্চুরিতে ২ ম্যাচে ৩১০ রান আছে তার।
বর্তমান দলে থাকাদের মধ্যে রান সংগ্রহে শীর্ষ পাঁচে আছেন হাশিম আমলা। ১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬ ম্যাচে ৩০৫ রান করে পঞ্চমস্থানে রয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারী বোলাররা
বৃহস্পতিবার ষষ্ঠবারের মতো টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের ৫টি টেস্ট সিরিজে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে প্রোটিয়ারা। তাই বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার আগের ৫টি সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারীদের দিকে চোখ বুলানো যাক।
বাংলাদেশের পক্ষে : দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী পেসার শাহদাত হোসেন। ৪ ম্যাচের ৫ ইনিংসে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার ২৭ রানে ৬ উইকেট। ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার ৯৭ রানে ৯ উইকেট।
এরপরই আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া সিরিজে বিশ্রামে থাকা সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৬ ম্যাচ। ৭ ইনিংসে ১৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
৪ ম্যাচের ৫ ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে তৃতীয়স্থানে রয়েছেন বাংলাদেশের একসময়কার সেরা বাঁ-হাতি স্পিনার মোহাম্মদ রফিক।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে : বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ উইকেট নিয়েছেন ডান-হাতি পেসার মাখায়া এনটিনি। ৮ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে বোলিং করে ৩৫ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার ১৯ রানে ৫ উইকেট। ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার ৭৪ রানে ৭ উইকেট।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আরেক ডান-হাতি পেসার ডেল স্টেইন। ৬ ম্যাচের ১০ ইনিংসে ২৮ উইকেট নিয়েছেন আসন্ন সিরিজে ইনজুরির কারনে অনুপস্থিত থাকা স্টেইন।স্টেইনের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬টি করে ম্যাচ খেলেছেন জক ক্যালিস ও মরনে মরকেল। ক্যালিস ১২ ইনিংসে ১৭টি ও মরকেল ১০ ইনিংসে ১৫ উইকেট নেন।
স্পিন সহায়তা পেতে পারে বাংলাদেশ
দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বৃহস্পতিবার ইতিহাস ও ফর্মে থাকা স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার
ব্যাটসম্যানদের মুখোমুখি সফরকারী বাংলাদেশ। পচেফস্ট্রুমে সেনিউজ পার্কে বাংলাদেশ দুপুর ২টায় টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
ইতোপুর্বে মোট চার বার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবারই টস জিতলেও চার টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে টাইগাররা।
সর্বশেষ ২০০৮-০৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বিবেচনায় বাংলাদেশ দলটি এখন অনেক শক্তিশালী। তথাপি স্বাগতিক অন্যান্য দেশের তুলনায় পচেফস্ট্রুমের পিচ দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশা ালী ফাস্ট বোলারদের জন্য সহায়ক হতে পারে।
যদিও এখানকার পিচে সাধারণত ব্যাটসম্যানরা সহায়তা পেয়ে থাকে। চলতি মাসে শুরুতে বিস্ময়করভাবে এখানে একটি টি-২০ টুর্নামেন্টে স্লো বোলাররা ভালো সহায়তা পেয়েছিলেন। তেমনটা ঘটলে বাংলাদেশ দলের শক্তিশালী স্পিন আক্রমণের জন্য সহায়ক হবে।
তারপরও সবদিক বিবেচনায় দক্ষিণ আফ্রিকাই এগিয়ে থাকবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ ব্যাটসম্যানরা ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক চারদিনের ম্যাচে ব্যস্ত থাকায় গত সপ্তাহে জোহানেসবার্গের কাছে বনোনিতে অনভিজ্ঞ আমন্ত্রণমূলক একাদশের বিপক্ষে ড্র করলেও বাংলাদেশ নিজেদের ভালোভাবে তুলে ধরতে পারেনি।
হাশিম আমলা, ডিন এলগার, তিউনিস ব্রুইয়ান এবং নতুন মুখ আইডেন মার্করাম সকলেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস ৯৬ এবং কুইন্টন ডি কক পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি।
একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন টেম্বা বাভুমা। দুই ইনিংসে তার রান ছিল যথাক্রমে ২৫ ও ০।
বেশ কয়েক বছর যাবত ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট খেলোয়াড়দের জন্য বাধ্যতামূলক না থাকলেও চলতি মৌসুমে নতুন কোচ ওটিস গিবসনের অধীনে প্রোটিয়া টেস্ট তারকাদের চার দিনের ঘরোয়া ম্যাচ খেলতে হয়েছে।
চলতি বছর ইংল্যান্ড সফরে ধুকতে থাকার পর এ ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ফর্ম ছিল উৎসাহব্যঞ্জক। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রন্ট লাইন বোলাররা খুব বেশি ভাল করতে পারেননি।
ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা ৩৮ ওভার বোলিং করেও ছিলেন উইকেট শুন্য। ডুয়ানে অলিভার প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট নিলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ছিলেন উইকেট শূন্য। এ ছাড়া বাঁ-হাতি স্পিনার
কেশব মহারাজ ৩৯ ওভার বোলিং করে মাত্র এক উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন।
কেবলমাত্র মরনে মরকেল কিছুটা সফল হয়েছেন- দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট।
পক্ষান্তরে শীর্ষ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের অনুপুস্থিতিতে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইনআপ নির্ভর করবে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই তারকা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এবং তামিম ইকবালের ওপর।
অনুশীলন ম্যাচে উরুর সমস্যার কারণে খুব বেশি খেলতে পারেননি তামিম। তবে ইনজুরি থেকে পুরোপুরি ফিট তিনি। প্রথম ম্যাচে খেলার ছাড়পত্রও পেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণের মূল ভরসাও সাকিব। সুতরাং, তাকে ছাড়া টাইগার দলের স্পিন আক্রমণটা কেমন হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তার অবর্তমানে দলে রয়েছেন একমাত্র স্লো বোলার তাইজুল ইসলাম। এ পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে তার শিকার ৫৪ উইকেট।
অপর দুই তরুণ বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার ২২ বছর বয়সী মুস্তাফিজুর রহমান ও অফ স্পিনার ১৯ বছর বয়সী মেহেদি হাসান সফরকারী দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন।
দল :
বাংলাদেশ : মুশফিকুর রহিম (অধি/উইকেটরক্ষক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ. মোমিনুল হক, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন. শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, শুভাশিষ
রায়।
দক্ষিণ আফ্রিকা : ফাফ ডু প্লেসিস(অধিনায়ক), ডিন এলগার, আইডেম মার্করাম, হাশিম আমলা, টেম্বা বাভুমা, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), তিউইনস ডি ব্রুইয়ান, কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাদা, মরনে মরকেল, ডুয়ানে অলিভার, ওয়েন পার্নেল, আন্দিল ফেলুকুয়াও।
No comments