রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ১৩ শিক্ষক কারাগারে
বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করার অভিযোগে চট্টগ্রামের বাঁশখালী
থানায় করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ১৩ শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার বাঁশখালীর জে৵ষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সাজ্জাদ হোসেনের আদালতে
আত্মসমর্পণ করে ওই শিক্ষকেরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন
আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত বছরের জুলাই মাসে বাঁশখালীসহ চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলায়
নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল
অংশের একটি প্রশ্নে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি লিয়াকত আলীর
কার্যক্রমকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তুলনা
করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন লিয়াকত। ওই আন্দোলনে চারজন নিহত হন।
করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন লিয়াকত। ওই আন্দোলনে চারজন নিহত হন।
নবম শ্রেণির ওই পরীক্ষার এক দিন পর গত বছরের ১৯ জুলাই
প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকসহ চট্টগ্রাম জেলার ছয় উপজেলা
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৩ শিক্ষককে আসামি করে পুলিশ
বাদী হয়ে মামলা করে। ওই দিনই দুজন শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া ও তাহেরুল ইসলামকে
বাঁশখালী থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
আদালত সূত্র জানায়, শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া ৪৯ দিন এবং তাহেরুল
১৫ দিন পর জামিনে মুক্তি পান। পরে মামলার আসামি শিক্ষকেরা উচ্চ আদালত থেকে
জামিন নেন।
গতকাল কারাগারে যাওয়া ১৩ শিক্ষক হলেন বাঁশখালীর বঙ্গবন্ধু
উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি বোয়ালখালী
উপজেলার সভাপতি মো. আলী, সাধারণ সম্পাদক আমীর হোসেন, বাঁশখালীর সভাপতি
তাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মিয়া, আনোয়ারার সভাপতি আবুল কালাম,
সাধারণ সম্পাদক বাদল দাশ, পটিয়ার সভাপতি মো. ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল
দে, সাতকানিয়ার সভাপতি অজিত কারণ, সাধারণ সম্পাদক ওয়াইজ উদ্দিন এবং
চন্দনাইশ উপজেলার সভাপতি বিজন ভট্টাচার্য্য ও সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম সৈয়দ
হোসেন। তাঁদের মধ্যে নয়জন প্রধান শিক্ষক, তিনজন সহকারী শিক্ষক।
বাঁশখালী আদালতের সরকারি কৌঁসুলি বিকাশ রঞ্জন ধর রাতে প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে শিক্ষকদের জামিনের বিরোধিতা করা হয়। পরে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামিদের আইনজীবী আবুল কালাম শামসুদ্দিন বলেন, অভিযুক্ত
শিক্ষকেরা জামিনে গেলে পলাতক হবেন না জানিয়ে তাঁদের জামিনের আবেদনে বলা হয়।
এরপরও আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর
বলেন, জামিন নামঞ্জুর হওয়া ১৩ শিক্ষককে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে
পাঠানো হয়েছে।
No comments