আরও যুদ্ধাস্ত্র তৈরির নির্দেশ কিম উনের
কঠিন জ্বালানির আরও রকেট ইঞ্জিন এবং আন্তমহাদেশীয়
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) ওয়ারহেড বা যুদ্ধাস্ত্র তৈরির
নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। দেশটির রাষ্ট্রীয়
সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ গতকাল বুধবার এক খবরে এ তথ্য জানায়। তবে
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা সত্ত্বেও সংবাদমাধ্যমটি এবার সরকারের
তরফ থেকে কোনো হুমকি বা হুঁশিয়ারি দেয়নি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের
ফনিক্সে এক জনসভায় সমর্থকদের বলেছেন, কিম জং-উন যুক্তরাষ্ট্রকে শ্রদ্ধা
করতে শুরু করেছেন। উত্তর কোরিয়ার শাসক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এমন
সুর পরিবর্তনকে অনেকেই দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নাটকীয় মোড়
হিসেবে দেখছেন।
সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এক খবরে গতকাল জানায়, উত্তর কোরিয়ার
একাডেমি অব ডিফেন্স সায়েন্সের কেমিক্যাল ম্যাটেরিয়াল ইনস্টিটিউট পরিদর্শনের
সময় উন কঠিন জ্বালানির আরও রকেট ইঞ্জিন এবং আইসিবিএমের যুদ্ধাস্ত্র তৈরির
নির্দেশ দেন। এ সময় তাঁকে আইসিবিএমের যুদ্ধাস্ত্র ও রকেট ইঞ্জিন তৈরির
প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত জেমস মার্টিন
সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন স্টাডিজের মনটেরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল
স্টাডিজের সহযোগী গবেষক ডেভিড শেমারলার সিএনএনকে বলেন, উত্তর কোরিয়া আসলে
বোঝাতে চাইছে যে কঠিন জ্বালানির ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে তারা উন্নতি
করছে। একই প্রতিষ্ঠানের মাইকেল ডাটসম্যান বলেন, কঠিন জ্বালানির
ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত ও সহজে উৎক্ষেপণ করা যায়। ফলে উৎক্ষেপণের আগে
প্রস্তুতিপর্ব শনাক্ত করাও তুলনামূলক কঠিন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সংগ্রহে থাকা সব ক্ষেপণাস্ত্রই কঠিন জ্বালানির।
কেসিএনএর খবরের সঙ্গে প্রকাশ করা একটি ছবিতে ‘পুকগুকসং-৩’ নামের একটি
ক্ষেপণাস্ত্রের পোস্টার দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগে পরীক্ষা চালানো
কঠিন জ্বালানির মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের উত্তরসূরি এটি। কেসিএনএ আরও
জানায়, কেমিক্যাল ম্যাটেরিয়াল ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের ‘নায়ক’ আখ্যা দিয়ে
তাঁদের ‘বিশেষ ধন্যবাদ এবং বিশেষ ভাতা’ দিয়েছেন কিম জং-উন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন কূটনৈতিক ও
অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ
সমাধানের প্রত্যয় ব্যক্ত করার কয়েক দিনের মাথায় কেমিক্যাল ইনস্টিটিউটে
কিমের পরিদর্শনের এই খবরটি এল। তবে অ্যারিজোনায় গত মঙ্গলবারের জনসভায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়া
যুক্তরাষ্ট্রকে সম্মান করতে শুরু করেছে। গত বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত
উত্তর কোরিয়া দুই দফায় পারমাণবিক বোমার এবং বেশ কয়েক দফায় ক্ষেপণাস্ত্রের
পরীক্ষা চালিয়েছে। এসব কর্মসূচির কারণে দেশটির ওপর জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করেছে।
No comments