Breaking News

বগুড়ায় অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করল ছাত্রলীগ




বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজে পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেয়ায় শিক্ষককে লাঞ্ছিতকারী ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করায় অধ্যক্ষের কক্ষ ভাংচুর করেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সোমবার দুপুরে এ ঘটনার সময় তারা অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে। অধ্যক্ষ এ হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাঝে মধ্যেই তার কাছে চাঁদা নিয়ে থাকে।
কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি বিশ্বজিৎ অধ্যক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কোনো শিক্ষককে লাঞ্ছিত বা কক্ষে ভাংচুর করা হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফরম পূরণে আইসিটি খাতে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত ৩০০ টাকা আদায়ের প্রতিবাদ করছিল। অধ্যক্ষ তাদের রুম থেকে বের করে দেয়ার সময় চেয়ার উল্টে ও টেবিলের কাঁচ ভেঙে গেছে।
অধ্যক্ষ অধ্যাপক এজাজুল হক জানান, ছাত্রলীগ সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাহা তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী না হলেও মাঝে মধ্যেই ১০-২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। রোববারও জোড় করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞানের ছাত্র জোবায়ের হোসেন জয় ২৬ আগস্ট সমাজবিজ্ঞান বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক নিলুফার রহমানের সঙ্গে অসদাচারণ করে। এ ঘটনার জন্য শিক্ষকরা ২৮ আগস্ট কলেজে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিলেন। জয় সেখানে এসেও ওই শিক্ষককে মারপিট করার চেষ্টা করেছিল। সোমবার কলেজে জীববিজ্ঞানের ব্যবহারিক পরীক্ষা চলছিল। নকল করতে না পেরে জয় দায়িত্বে থাকা শিক্ষক রেজাউল করিমের সঙ্গে অসদাচরণ করে। তখন জয়কে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে বেলা ২টার দিকে ছাত্রলীগ সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাহার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন নেতাকর্মী তার অফিসে এসে গালাগাল ও পর হামলা চালিয়ে টেবিল, চেয়ার, টেলিফোন সেট ভাংচুর করেন। বাধা দিলে অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষককে ধাক্কা দেয়। শাজাহানপুর থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষের কক্ষে হামলার খবর পেয়ে সরকারি শাহ সুলতান কলেজে গিয়েছিলেন। এর আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। অধ্যক্ষ মৌখিকভাবে তার কক্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ ক্যাডারদের অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ। তাদের কারণে কলেজের কোনো উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না। কলেজের পরিবেশ ধ্বংসের পথে। সবকিছুতেই তাদের চাঁদা দিতে হয়।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাহা জানান, তিনি এ কলেজ থেকেই অনার্স পাস করেছেন; মাস্টার্সে ভর্তি হবেন। তিনি বলেন, আইসিটি খাতের নামে রশিদ ছাড়া ৩০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছিল। সোমবার পরীক্ষা চলাকালে অধ্যক্ষ এসে কে কে ফি দেয়নি তা জানতে চাইছিল। তার সংগঠনের কর্মী জোবায়ের হোসেন জয় ও সাধারণ ছাত্র মুক্তাদুর ইসলাম মিম প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ তাদের গালাগাল করেন। এরপর জয়কে বহিষ্কার করা হয়। তিনি দাবি করেন, অধ্যক্ষের কক্ষে ভাংচুর বা কাউকে লাঞ্ছিত করা হয়নি।

কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া জানান, বিকাল ৫টায় বৈঠকে সরকারি সম্পদ নষ্ট এবং বিশৃঙ্খলার অভিযোগে বিশ্বজিৎ, শাওন, সোহেল, আতিক ও জুবায়েরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

No comments