লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাত
২০ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সমবেত কণ্ঠে ‘লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা
লাব্বায়েক’ ধ্বনিতে মুখর হলো মক্কার আরাফাতের ময়দান। ফজরের নামাজের পরই
মিনা থেকে মুসল্লিরা সমবেত হন আরাফাতের ময়দানে। সেখানে মুসল্লিদের উদ্দেশে
খুতবা পাঠ ও বয়ান করা হয়। পরে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করে সূর্যাস্ত
পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান নেন।
সূর্যাস্তের পর পাঁচ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে একসঙ্গে মাগরিব ও এশার
নামাজ আদায়ের পর খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করেন মুসল্লিরা। সেখান থেকে
শয়তানকে মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করে ভোরে ফজর নামাজ পড়ে আবার মিনায় ফেরার
পালা। পরে শয়তানকে ৭টি পাথর মেরে কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে গোসল করেন
মুসল্লিরা।
এরপর ইহরাম ছেড়ে স্বাভাবিক পোশাক পরে মক্কায় ফিরে কাবা শরিফ তাওয়াফ। এ
সময় কাবার সামনে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সাতবার সায়ি অর্থাৎ দ্রুত গতিতে
হাঁটবেন। সেখান থেকে আবার মিনায় যাত্রা। সেখানে দুদিন অবস্থান করে শয়তানকে
পাথর মেরে হজের বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন মুসল্লিরা।
বুধবার হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর মক্কার কাবা শরিফ থেকে রওনা হয়ে পাঁচ
কিলোমিটার দূরে মিনায় জড়ো হন মুসল্লিরা। ইবাদত-বন্দেগিতে মিনায় রাত কাটানোর
পর আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেন, জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়েন।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য বুধবার এশার নামাজের পর থেকেই তারা মিনা থেকে
১০ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শাইখ আরাফাতের মসজিদে নামিরাহ
থেকে হজের খুতবা দেন। রেডিও ও টেলিভিশনে তা সম্প্রচার করা হয়।
প্রায় চার বর্গমাইল আয়তনের আরাফার ময়দানের দক্ষিণে মক্কা হাদা তায়েফ
রিংরোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায়
পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত।
মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়ার পৃথিবীতে
পুনর্মিলন হয়েছিল এ আরাফাতের ময়দানে। এখানে তারা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা
জানান।
এই আরাফাতেই ১৪শ বছরের বেশি সময় আগে ইসলামের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (স) তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
ইসলামের রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিন আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হলো হজ।
আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই হজে এসে
যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতের
ময়দানে নেওয়া হয়।
No comments