আইএস বর্তমানে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার ১৬ বছর পর আল
কায়দা জঙ্গিগোষ্ঠী ফের ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তারা
জানান, সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ছত্রচ্ছায়ায় পুনরায় আবির্ভাব ঘটেছে
আল কায়দার। এছাড়া আরও নতুন নতুন নামে খণ্ডখণ্ডভাবে ফিরে আসতে পারে আল
কায়দা। গত মাসে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ইদলিব শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল হায়াত
তেহরির আলশাম (এইচটিএস) নামের এক সুন্নিগোষ্ঠী। এটি নিশ্চিতভাবে আল কায়দার
নতুন ‘ব্রান্ডিং’ গোষ্ঠী। ইতিমধ্যে তারা বিদ্রোহের আশা নিয়ে আইএসের চেয়ে
বেশি আধুনিক ধাঁচে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে ফেলেছে।
হোয়াইট হাউসের সন্ত্রাসবিরোধী বিভাগের সাবেক পরিচালক জশুয়া গেল্টজার বলেন,
‘আইএস বর্তমানে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি, তবে সিরিয়ায় আল কায়দা গোষ্ঠীও
চরম উদ্বেগের বিষয়। বর্তমানে আইএস আল কায়দার সর্ববৃহৎ বৈশ্বিক শাখা।’
যুক্তরাষ্ট্রের থিংকট্যাংক ফাউন্ডেশন ‘নিউ আমেরিকা’ দেশটির বিরুদ্ধে চলমান
সন্ত্রাসী হুমকির বিষয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে
গেল্টজার ও অন্য বিশ্লেষকরা বলেন, ইরাক সিরিয়ায় আইএসকে হটিয়ে জঙ্গিবাদের
মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে এইচটিএস সুন্নিগোষ্ঠী। বিশ্লেষকরা
আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আল কায়দার নাম পরিবর্তন করেই আবির্ভূত হয়েছে
এইচটিএস গোষ্ঠী।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইদলিবের দখল নিয়ে তারা (এইচটিএস) তাদের বিরোধীদের
তাড়িয়ে দিয়েছে বা নিশ্চিহ্ন করেছে এবং আইএসের ওয়েবভিত্তিক প্রচারণায়
পরিবর্তন এনে আধুনিকায়ন করেছে। নিউ আমেরিকা প্রকাশিত প্রতিবেদনের সহকারী
লেখক ডেভিড গার্টিনস্টেইন আল কায়দাকে ২০১০ সালের তুলনায় ‘অনেক শক্তিশালী’
সংগঠন বলে অভিহিত করেন, যখন তার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আইএসের উত্থান
ঘটেছিল। তিনি বলেন, ‘আইএস দক্ষতার সঙ্গে নিজের সংগঠনটিকে ‘মধ্যপন্থী জিহাদি
গোষ্ঠী’ হিসেবে পরিচালিত করেছে। আপনি তাদের পছন্দ নাও করতে পারেন, কিন্তু
আপনি তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারেন।’ উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছ থেকে তারা বহু
সহায়তা পেয়েছে বলেও জানান গার্টিনস্টেইন।
নিউ আমেরিকার প্রতিবেদনে আইএসকে বর্তমানে সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ
করা হয়েছে। কিন্তু এতে বলা হয়, আল কায়দা ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ হুমকি হিসেবে
পুনরায় ভূমিকা পালন করতে পারে এবং আইএসের চরম যুদ্ধকৌশলের অনুসারীরা আল
কায়দায় ভিড়তে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সিরিয়াতে আল কায়দা তার
নামকরণ এবং সাংগঠনিক নকশায় কসমেটিক পরিবর্তন এনেছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে
আল কায়দা তার মূল সংস্থার সঙ্গে কোনো সংযোগ স্থাপন ছাড়াই নীরবে কাজ চালিয়ে
যাচ্ছে।’ এএফপি।
No comments