Breaking News

বিমানে দুর্নীতি

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ কর্তৃপক্ষের টনক নড়াবে কি?
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ বেশ পুরনো হলেও এসব নির্মূলে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। এ সংস্থার দুর্নীতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে খোদ প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রশ্ন হল, সব বিষয়ে যদি প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয় তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত
উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা কী করেন? অভিযোগ রয়েছে, বিমানের বিভিন্ন দেশের স্টেশনে কর্মরত অনেক কর্মকর্তা যাত্রীদের বিমানে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন। এ থেকেই স্পষ্ট, এসব কর্মকর্তা বিদেশী এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে থাকেন। বিমানের বিভিন্ন দেশের স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরও কত ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত তা খুঁজে বের করা জরুরি। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খুঁটির জোর কোথায়, তাও খুঁজে বের করে নেপথ্যের দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। দুর্নীতি এ সংস্থার এতটাই গভীরে প্রবেশ করেছে যে, প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও যথাযথ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের মনে আছে, হাঙ্গেরি যাত্রাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে ওই উড়োজাহাজকে তুর্কমেনিস্তানে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছিল।
বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজে যেভাবে ঘন ঘন যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটছে, তাতে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষ সতর্ক না হলে আগামীতে এ সংস্থাকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা কঠিন হতে পারে। বিমানের ভাবমূর্তি ইতিমধ্যেই ক্ষুণ্ণ হয়েছে নানা কারণে। এ সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের জাল যেভাবে বিস্তৃত হয়েছে, তা সমূলে উৎপাটনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দুঃখজনক হল, এ সংস্থাকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার তেমন কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। সংস্থাটির সার্বিক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও কেন কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না, এটিও এক বড় প্রশ্ন।
বিভিন্ন দেশের স্টেশনে কর্মরত বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাতে আশা করা যায় দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলেই শুধু নয়, এ সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের সমূলে উৎপাটনে কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিমানের প্রতিটি বিভাগে শুদ্ধি অভিযান না চালালে সংস্থাটিকে দুর্নীতিমুক্ত রাখা যে কঠিন হবে, তা বলাই বাহুল্য।

No comments