খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পর নতুন চিন্তা বিএনপির
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭,বুধবার, ০৬:১৩
| আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭,বুধবার, ০৬:২৫
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দেশে
ফিরছেন। ফেরার তারিখ এখনো সুনির্দিষ্ট না হলেও এ মাসে তার দেশে ফেরার
বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত। লন্ডনে দলের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে এ তথ্য
জানা গেছে। খালেদা জিয়া ফেরার পর বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের
চিন্তা করছে বিএনপি।প্রায় দুই মাস ধরে দেশের বাইরে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। গত ১৫ জুলাই চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটাতে লন্ডনে যান তিনি। এ সফর একান্ত ব্যক্তিগত হলেও তিনি সেখানে কি করছেন, কবে ফিরবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে নানা কৌতূহল।
লন্ডন বিএনপির এক নেতা গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ২২, ২৩ অথবা ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া। চলতি সপ্তাহে তাকে আবারো চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসকেরা ছাড়পত্র দিলে এ মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি দেশে ফিরবেন।
এদিকে গতকাল লন্ডনে খালেদা জিয়ার একটি সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা হয়নি। কবে হবে সে তারিখও ঠিক হয়নি। দেশে ফেরার আগে যে কোন দিন তিনি নেতা-কর্মীদের সাথে মিলিত হতে পারেন বলে জানা গেছে।
বিদেশে অবস্থান করলেও দেশের রাজনীতির খোঁজখবর প্রতিনিয়তই রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দলের মহাসচিব সাথে টাইম টু টাইম কথা হচ্ছে। দেশে বন্যার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার নির্দেশনা তিনিই দিয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিএনপি এবার অনেকটা সুশৃঙ্খল পন্থায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম ছিল উল্লেখ করার মতো। নির্বাচনের আগে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি দলের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে বলে তাদের মত। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও সরকারের উপর চাপ প্রয়োগের পাশাপাশি দলটি কক্সবাজারে একটি টিম পাঠিয়ে মজলুম রোহিঙ্গাদের সার্বিক সহায়তায় নেমেছে। দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবাও।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের এই কার্যক্রমের পাশাপাশি বিএনপি সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে বন্যা ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যস্ত থাকায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছায়নি।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরলে বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চিন্তা করছে বিএনপি। সহায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরার পাশাপাশি এই ইস্যুতে সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে কর্মসূচির ধরনও পাল্টে ফেলতে পারে দলটি। বছর দুয়েক ধরে সাদামাটা কর্মসূচিতে থাকা বিএনপি নির্বাচনকে মূল লক্ষ্য ধরে এখন সামনে এগুচ্ছে। আসছে ডিসেম্বর থেকে কিংবা নতুন বছরে সত্যিকারভাবেই ঘুঁরে দাঁড়াতে চায় তারা।
লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির এক নেতা বলেছেন, সাংগঠনিকভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের চলমান লন্ডন সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেখানে দলের দ্বিতীয় প্রধান নেতা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান রয়েছেন। মা ও ছেলের মধ্যে সংগঠন ও আগামী দিনের রাজনীতির গতিপথ নিয়ে তাই আলোচনা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। ওই নেতা বলেন, দল পুনর্গঠন এবং কর্মসূচি প্রণয়নে তারেক রহমান সবসময়ই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দেশে থাকা অবস্থায় মা ও ছেলের মধ্যে টেলিফোন আলাপে কিংবা বার্তাবাহকের মাধ্যমে পরামর্শ বিনিময় হয়ে থাকে।
আগামী বছর নির্বাচনের। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া আর লন্ডনে নাও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রতিটি আসনে দলের যোগ্য প্রার্থী ঠিক করা এবং আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে কোন কোন দিকগুলো প্রাধান্য দেয়া হবে, তা নিয়ে দুই নেতা সরাসরি কথা বলেছেন বলেই তারা জেনেছেন।
খালেদা জিয়ার এ সফরের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব আছে কি-না জানতে চাইলে দলের এক নেতা বলেন, কূটনৈতিক পর্যায়ে একাধিক মিটিং হওয়ার কথা শুনেছি, তবে তা নিশ্চিত নয়।
No comments