ধর্ষণের সাক্ষী রইল পথচারীরা
দিনে দুপুরে খোলা রাস্তায় চলল ধর্ষণ। আর ধর্ষণের সাক্ষী রইল পথচারীরা। কিন্তু তারা এই কাণ্ড না রুখে বরং মুঠোফোনে ভিডিও রেকর্ডিংয়ে ব্যাস্ত ছিলেন। এক স্বাধীন দেশে, জনসমক্ষে, রাস্তায় ফেলে এভাবে এক নারীর সঙ্গে নারকীয় যৌন অত্যাচারের ঘটনা কেউ রুখতে এগিয়ে আসেনি। এই লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে ভারতে বিশাখাপত্তনমে।
বিশাখাপত্তনমের তাদিচেতলাপালেমের নিউ রেলওয়ে কলোনি এলাকার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। সেখানে রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাস্তার ফুটপাথে এক ৪৩ বছরের নারীকে ধর্ষণ করে গঞ্জি শিবা (২১) নামের এক মদ্যপ যুবক। ধর্ষক যুবক ট্রাক পরিস্কারের কাজ করে। ঘটনার কথা পুলিশ জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত ধর্ষককে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই সপ্তাহের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মধুসূদন মূর্তি বলেন, সড়কটি শহরটির অন্যতম ব্যস্ত সড়ক। যখন গঞ্জি শিবা ওই নারীর ওপর চড়াও হয়েছিলেন, তখনো রাস্তায় মানুষজনের ভিড় ছিল। দুজনের বক্তব্যই আমরাই নিয়েছি। কিন্তু দুজনের বক্তব্যই খুব অসংলগ্ন ও এতে অনেক অসংগতি আছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাস্তায় পড়ে কাতরাতে থাকা ওই নারী তখন এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েন যে চিৎকার করার ক্ষমতাও তিনি হারিয়ে ফেলেন। এক অটোরিকশার চালকের করা ভিডিওর চিত্রে দেখা গেছে, ওই নারীকে যখন ধর্ষণ করা হচ্ছিল, তখন অনেক মানুষ পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেনি। নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মীরা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, কেন ওই অটোরিকশার চালক নির্যাতনের শিকার নারীকে সাহায্য করার বদলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করছিলেন। তাদের বক্তব্য, ওই নারীকে সাহায্য করলেই বরং সঠিক কাজ করা হতো। জানা গেছে , আগে থেকেই ওই নারী দুর্বল অবস্থায় ফুটপাথে গাছের ছায়ায় শুয়ে ছিলেন। পানি আর খিদের তাড়নায় তিনি পড়েছিলেন সেখানে। তখনই তার ওপর চড়াও হয় অভিযুক্ত শিবা। স্থানীয় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুরেশ জানিয়েছেন, ধর্ষণের শিকার নারীর বয়স ৪৩ বছর। তিনি পারিবারিক ঝগড়ার কারণে দুই দিন আগে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তিনি খুব দুর্বল ছিলেন। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কিছু খাননি। ঘটনার সময় অনেক পথচারী প্রতিবাদের বদলে মুঠোফোনে ছবি তোলা বা ভিডিও করার প্রতিই বেশি আগ্রহী ছিলেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। পরে ওই অটোরিকশার চালক একটি ভিডিও চিত্র ধারণ করে জমা দিলে পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে।
No comments