কাঙ্ক্ষিত নারীকে পেতে দুই হাতে টাকা উড়াতেন।
অবৈধ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন কাকরাইলের চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের
হোতা শেখ মো. আবদুল করিম। তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে চলাফেরা করতেন।
যাকে মন চাইত তাকে নিয়ে দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করতেন। ফুর্তি করতেন। কাঙ্ক্ষিত নারীকে পেতে দুই হাতে টাকা উড়াতেন। নারী আসক্ত করিমের এই অবাধ জীবন-যাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ান তার প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার। এ পথ থেকে করিম যদি ফিরে না আসেন তবে তাকে ডিভোর্স দেওয়ারও হুমকি দেন শামসুন্নাহার। ভয় পেয়ে যান করিম। তাকে দমাতে মারধর করেন। কিন্তু একরোখা শামসুন্নাহারের কাছে ব্যর্থ হন তিনি। তাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন আক্তার মুক্তা ও তার ভাই আল আমিন জনি। প্রথম স্ত্রীকে সরিয়ে দিতে তারা সবাই মিলে রাঙামাটিতে মিলিত হন। চুলচেরা বিশ্লেষণের পর জনিকে দায়িত্ব দেন আলম। জনি একাই খুন করেন শামসুন্নাহারকে। কিন্তু করিমের ছেলে সাজ্জাদুল করিম শাওনের মৃত্যু ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। গতকাল মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হত্যার নেপথ্য জানতে করিম, মুক্তা ও জনিকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মুখোমুখিও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা মা-ছেলে হত্যার বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছেন। জনি একাই মা-ছেলেকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। কয়েক মাস আগে রাঙামাটিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন করিম, মুক্তা, তার ভাই জনিসহ আরও একজন। সেখানে বসেই পারিবারিক বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। ওই সময়েই শামসুন্নাহারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। গত বছরের অক্টোবরে মুক্তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় করিমের। ওই সময় করিম তাকে ডিভোর্স দিচ্ছেন বলে জানতে পারেন মুক্তা। মুক্তা মনে করেন এ ঘটনার পেছনে শামসুন্নাহারের হাত রয়েছে। এমনকি মুক্তাকে একটি ডিভোর্স লেটারও পাঠান করিম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মুক্তা, তার মা ও ভাই জনি। রিমান্ডে মুক্তার স্বীকারোক্তি অনুসারে, শামসুন্নাহারকে ‘শায়েস্তা’ করতেই গত বছরের নভেম্বরে কাকরাইলের বাসায় গিয়ে তাকে মারধর করেছিলেন। কিন্তু এতেও তার ক্ষোভ মেটেনি। মুক্তা ভেবেছিলেন শামসুন্নাহারকে সরিয়ে দিলেই তার পথের কাঁটা দূর হবে। পরিকল্পনা অনুসারে ৩১ অক্টোবর নিউমার্কেট থেকে একটি ছুরি কেনেন জনি। ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় তিনি কাকরাইলের মায়াকানন বাড়িতে যান। কলিংবেল চাপলে গৃহকর্মী দরজা খুলে দেন। পরে গৃহকর্মী রান্নাঘরে ঢুকলে জনি রান্নাঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেন। ঘটনার সময় বাসায় শামসুন্নাহার ও তার তৃতীয় সন্তান শাওন বাসায় ছিলেন। শাওন তার মাকে রক্ষার চেষ্টা করলেই তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। করিম, মুক্তা ও জনিকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য নিশ্চিত হয়েছে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে করিম ও শামসুন্নাহার দম্পতির মেজো ছেলে আশিকুর রহমান অনিক সাংবাদিকদের বলেন, আব্বু একটি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছিলেন মুক্তাকে। এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে গত বছরের নভেম্বরে তারা আমাদের বাসায় এসেছিল। আমি তখন ঢাকার বাইরে ছিলাম। তারা আমার আম্মুকে মারধর করেছে। বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় মা (শামসুন্নাহার) জিডি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে থানা-পুলিশে যাননি। বাবার অধঃপতন মা কখনো মেনে নিতে পারেননি। এ জন্য তাকে প্রাণ দিতে হলো। বাধা দেওয়ায় আমার ছোট ভাই শাওনকে সরিয়ে দেওয়া হলো। শামসুন্নাহারের ঘনিষ্ঠ এক স্বজন বলেন, শামসুন্নাহারের পরিবার খুবই ধার্মিক। তিনি ছোট থেকেই নামাজ-রোজা ও পর্দা করতেন। যখন তার বিয়ে হয় তখন করিম গরিব ছিলেন। মাথায় করে তরকারি বিক্রি করে পরিবার চালাতেন। একপর্যায়ে পুরান ঢাকায় নিত্যপণ্যের ব্যবসা তার জীবন পাল্টে দিতে থাকে। এরপর জমি ও ভবন দখলে মেতে ওঠেন। ফিল্ম ব্যবসাও শুরু করেন। খুব দ্রুতই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
তিনি যতবারই করিমকে সুপথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন ততবারই মার খেয়েছেন। কিন্তু তিন সন্তানের দিকে তাকিয়ে এবং পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে নীরবে সয়ে গেছেন। করিমকে না ফেরাতে পেরে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রথম সন্তান মুন্নাকে লন্ডন পাঠিয়ে দেন। চলতি বছরের প্রথম দিকে দ্বিতীয় সন্তান অনিককে কানাডা পাঠান। তৃতীয় সন্তান শাওনকেও বিদেশে পাঠানোর চিন্তা করছিলেন শামসুন্নাহার।
করিম ও শামসুন্নাহার দম্পতির দুই সন্তান মুন্না ও অনিক বলে, এই হত্যাকাণ্ডে যদি আমাদের আব্বুও জড়িত থাকেন আমরা তার শাস্তি চাই। আমাদের মা অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন। তিনি আব্বুকে সবসময় বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। এসব কারণেই মুক্তা ও তার পরিবারের সদস্যরা আমার মা ও ভাইকে হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাকরাইলের ভিআইপি রোডের ৭৯/এ নম্বর বাড়িতে মা শামসুন্নাহার ও ছেলে শাওনকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ২ নভেম্বর নিহত শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। এতে নিহতের স্বামী আবদুল করিম, করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তা ও মুক্তার ভাই আল আমিন জনিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এই মামলার আসামি করিম, মুক্তা ও জনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব। রবিবার জনির ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এর আগে শুক্রবার করিম ও মুক্তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
যাকে মন চাইত তাকে নিয়ে দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করতেন। ফুর্তি করতেন। কাঙ্ক্ষিত নারীকে পেতে দুই হাতে টাকা উড়াতেন। নারী আসক্ত করিমের এই অবাধ জীবন-যাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ান তার প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার। এ পথ থেকে করিম যদি ফিরে না আসেন তবে তাকে ডিভোর্স দেওয়ারও হুমকি দেন শামসুন্নাহার। ভয় পেয়ে যান করিম। তাকে দমাতে মারধর করেন। কিন্তু একরোখা শামসুন্নাহারের কাছে ব্যর্থ হন তিনি। তাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন আক্তার মুক্তা ও তার ভাই আল আমিন জনি। প্রথম স্ত্রীকে সরিয়ে দিতে তারা সবাই মিলে রাঙামাটিতে মিলিত হন। চুলচেরা বিশ্লেষণের পর জনিকে দায়িত্ব দেন আলম। জনি একাই খুন করেন শামসুন্নাহারকে। কিন্তু করিমের ছেলে সাজ্জাদুল করিম শাওনের মৃত্যু ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। গতকাল মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হত্যার নেপথ্য জানতে করিম, মুক্তা ও জনিকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মুখোমুখিও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা মা-ছেলে হত্যার বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছেন। জনি একাই মা-ছেলেকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। কয়েক মাস আগে রাঙামাটিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন করিম, মুক্তা, তার ভাই জনিসহ আরও একজন। সেখানে বসেই পারিবারিক বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। ওই সময়েই শামসুন্নাহারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। গত বছরের অক্টোবরে মুক্তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় করিমের। ওই সময় করিম তাকে ডিভোর্স দিচ্ছেন বলে জানতে পারেন মুক্তা। মুক্তা মনে করেন এ ঘটনার পেছনে শামসুন্নাহারের হাত রয়েছে। এমনকি মুক্তাকে একটি ডিভোর্স লেটারও পাঠান করিম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মুক্তা, তার মা ও ভাই জনি। রিমান্ডে মুক্তার স্বীকারোক্তি অনুসারে, শামসুন্নাহারকে ‘শায়েস্তা’ করতেই গত বছরের নভেম্বরে কাকরাইলের বাসায় গিয়ে তাকে মারধর করেছিলেন। কিন্তু এতেও তার ক্ষোভ মেটেনি। মুক্তা ভেবেছিলেন শামসুন্নাহারকে সরিয়ে দিলেই তার পথের কাঁটা দূর হবে। পরিকল্পনা অনুসারে ৩১ অক্টোবর নিউমার্কেট থেকে একটি ছুরি কেনেন জনি। ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় তিনি কাকরাইলের মায়াকানন বাড়িতে যান। কলিংবেল চাপলে গৃহকর্মী দরজা খুলে দেন। পরে গৃহকর্মী রান্নাঘরে ঢুকলে জনি রান্নাঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেন। ঘটনার সময় বাসায় শামসুন্নাহার ও তার তৃতীয় সন্তান শাওন বাসায় ছিলেন। শাওন তার মাকে রক্ষার চেষ্টা করলেই তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। করিম, মুক্তা ও জনিকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য নিশ্চিত হয়েছে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে করিম ও শামসুন্নাহার দম্পতির মেজো ছেলে আশিকুর রহমান অনিক সাংবাদিকদের বলেন, আব্বু একটি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছিলেন মুক্তাকে। এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে গত বছরের নভেম্বরে তারা আমাদের বাসায় এসেছিল। আমি তখন ঢাকার বাইরে ছিলাম। তারা আমার আম্মুকে মারধর করেছে। বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় মা (শামসুন্নাহার) জিডি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে থানা-পুলিশে যাননি। বাবার অধঃপতন মা কখনো মেনে নিতে পারেননি। এ জন্য তাকে প্রাণ দিতে হলো। বাধা দেওয়ায় আমার ছোট ভাই শাওনকে সরিয়ে দেওয়া হলো। শামসুন্নাহারের ঘনিষ্ঠ এক স্বজন বলেন, শামসুন্নাহারের পরিবার খুবই ধার্মিক। তিনি ছোট থেকেই নামাজ-রোজা ও পর্দা করতেন। যখন তার বিয়ে হয় তখন করিম গরিব ছিলেন। মাথায় করে তরকারি বিক্রি করে পরিবার চালাতেন। একপর্যায়ে পুরান ঢাকায় নিত্যপণ্যের ব্যবসা তার জীবন পাল্টে দিতে থাকে। এরপর জমি ও ভবন দখলে মেতে ওঠেন। ফিল্ম ব্যবসাও শুরু করেন। খুব দ্রুতই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
তিনি যতবারই করিমকে সুপথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন ততবারই মার খেয়েছেন। কিন্তু তিন সন্তানের দিকে তাকিয়ে এবং পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে নীরবে সয়ে গেছেন। করিমকে না ফেরাতে পেরে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রথম সন্তান মুন্নাকে লন্ডন পাঠিয়ে দেন। চলতি বছরের প্রথম দিকে দ্বিতীয় সন্তান অনিককে কানাডা পাঠান। তৃতীয় সন্তান শাওনকেও বিদেশে পাঠানোর চিন্তা করছিলেন শামসুন্নাহার।
করিম ও শামসুন্নাহার দম্পতির দুই সন্তান মুন্না ও অনিক বলে, এই হত্যাকাণ্ডে যদি আমাদের আব্বুও জড়িত থাকেন আমরা তার শাস্তি চাই। আমাদের মা অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন। তিনি আব্বুকে সবসময় বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। এসব কারণেই মুক্তা ও তার পরিবারের সদস্যরা আমার মা ও ভাইকে হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাকরাইলের ভিআইপি রোডের ৭৯/এ নম্বর বাড়িতে মা শামসুন্নাহার ও ছেলে শাওনকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ২ নভেম্বর নিহত শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। এতে নিহতের স্বামী আবদুল করিম, করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তা ও মুক্তার ভাই আল আমিন জনিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এই মামলার আসামি করিম, মুক্তা ও জনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব। রবিবার জনির ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এর আগে শুক্রবার করিম ও মুক্তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
No comments