রাশিয়ার বিশাল সামরিক মহড়া, চিন্তায় ন্যাটো
লেবারুশকে সঙ্গে নিয়ে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। জাপাড-২০১৭ শীর্ষক এই মহড়া নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে রাশিয়ার প্রতিবেশী ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো। ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়াকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর এটি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া।
বেলারুশের ভেতরে ও বাইরে চলমান এই যৌথ মহড়ায় রাশিয়ার বিপুলসংখ্যক সেনা অংশ নিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১২ হাজার ৭০০ রুশ সেনা মহড়ায় যোগ দিয়েছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সশস্ত্র ইউনিট, ব্যাপকসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান রয়েছে।
এদিকে, মহড়া নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরেশেঙ্কো বলেছেন, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পূর্বপ্রস্তুতি হতে পারে জাপাড-২০১৭ মহড়া। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কিয়েভ।ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে দেশটির রাশিয়াপন্থি বিদ্রোহীদের হাতে। ২০১৫ সালে মিনস্কে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও প্রায়ই তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে।
ন্যাটোর অভিযোগ, ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও রসদ দিয়ে সাহায্য করছে রাশিয়া। রুশ সেনারা বিদ্রোহীদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া বরাবরই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।বেলারুশ ও রাশিয়ার সীমান্তবর্তী পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুনিয়ায় ৪ হাজার ৫৩০ সেনা মোতায়েন করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)। ২৯ সদস্যের ন্যাটো বাল্টিক দেশগুলোতে আকাশনিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করেছে।
বেলারুশ সরকার জানিয়েছে, জাপাড মহড়ায় অংশগ্রহণকারী রুশ সেনারা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের দেশ ছেড়ে যাবে। মহড়া শেষ হবে ২০ সেপ্টেম্বর।
মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের
জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ বুধবার মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস রাখাইন রাজ্যে সেনা তৎপরতাকে মূলত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য বুধবার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের নিন্দা এবং সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারের অন্যতম সমর্থক চীনও বৈঠকে অংশ নেয়। খবর এএফপি’র।
নিরাপত্তা পরিষদ এ প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে সর্বসম্মত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।
গত মাসে রোহিঙ্গা সদস্যদের হামলার জবাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক দমন-পীড়ন ও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
মিয়ানমার নেত্রী অং সান সুকির প্রতি রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর একের পর এক আন্তর্জাতিক আহ্বান তীব্র হয়ে ওঠে। সুকির মুখপাত্র জানান, তিনি আগামী সপ্তাহে মিয়ানমারের শান্তি ও পুনর্মিলন নিয়ে বক্তব্য দেবেন। এর আগে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কারণে তিনি চলতি মাসের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন না।
নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, গণহারে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন করা হচ্ছে যা জাতিগত নির্মূলের শামিল।
তিনি আরো বলেন, আমি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি অবিলম্বে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ, সহিংসতার অবসান এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ দেশ ত্যাগে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
রোহিঙ্গারা জাতিগত নির্মূলের শিকার এ বিষয়ে তিনি একমত কিনা এ প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব বলেন, যখন এক-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়, তখন বিষয়টিকে বর্ণনা করার জন্যে এর চেয়ে ভালো শব্দ কী হতে পারে?
গুতেরেস বলেন, মিয়ানমার সরকারকে হয় রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে, অথবা তাদের বৈধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে পারে।
সহিংসতার নিন্দা করে নিরাপত্তা পরিষদ রাখাইন রাজ্যে ত্রাণকর্মীদের পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে।
No comments