গোল করার কেউ নেই! মেসি
মেসির একের পর এক চেষ্টা, কিন্তু গোল করার কেউ নেই!
প্রথমার্ধের অন্তিম সময়ে বেনেডেত্তোকে দারুণ বল বাড়িয়েছিলেন মেসি। ক্রসটি গোলের সামনে বেনেডেত্তোর সামনে ড়ে। কিন্তু বোকা জুনিয়র্সের এই স্ট্রাইকারের হেডটি ক্রসবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
এর তিন মিনিট আগে মেসি নিজেই চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। কিন্তু সেটা ভয়াবহভাবে ব্যর্থ হয়। গোলপোস্টের ২৫ গজ দূর থেকে তিনি পেরুর তিন খেলোয়াড়কে পরাস্ত করে নেটে বলটি পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অল্পের জন্য সেটা আর জল স্পর্শ করতে পারেনি।
ডি মারিয়াও ভয়াবহ মিস করেছেন। খেলার ২৪ মিনিটে পেরুর বিরুদ্ধে বাঁচা-মরা ম্যাচে মেসি দারুণ পাস দিয়েছিলেন বেনেডেত্তোকে। তবে তিনি বলটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি। বলটি চলে যায় ডি মারিয়ার কাছে। কিন্তু তিনি পেনাল্টি এরিয়া থেকে তার শটটি ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়।
হোম ভেনুতে পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের ফলাফলেই চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে মেসি অ্যান্ড কোংয়ের আসন্ন বিশ্বকাপ ভাগ্য। জয়ই তাদের রাখবে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট অর্জনের হট সিটে। এ ক্ষেত্রে শেষ খেলায় ইকুয়েডরের বিপক্ষে ড্র করলেও সরাসরিই আসন্ন মেগা আসরে খেলার ছাড়পত্র তারা পেয়ে যেতে পারে। তবে চিলি অবশিষ্ট দুই ম্যাচে জিতলে তৈরি হবে নতুন সমীকরণ।
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতায় জটিলতায় মেসিরা
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতায় জটিলতায় মেসিরাকাতালোনিয়ার স্বাধীনতায় জটিলতায় মেসিরা
রোববার ন্যু ক্যাম্পে দর্শকদের বাদ দিয়েই খেলে বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব৷ মঙ্গলবার কাতালোনিয়ায় সাধারণ ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছে এই কিংবদন্তিপ্রতিম ক্লাব৷ কিন্তু আগামীতে কোথায় খেলবে ‘বার্সা?
সোমবারেই প্রশ্নটা তোলেন এফ সি বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট হোসেপ মারিয়া বার্তোমিউ৷
‘‘(কাতালোনিয়ার) স্বাধীনতার ক্ষেত্রে (বার্সেলোনা) ক্লাব ও তার সদস্যদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কোন (ফুটবল) লিগে খেলব,'' একটি বোর্ড সভার পর সাংবাদিকদের বলেন বার্তোমিউ৷
‘‘আমরা একটি সংকটপূর্ণ ও জটিল মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে, সে প্রসঙ্গটি আমরা শান্তি ও বিজ্ঞতার সঙ্গে বিবেচনা করব,'' বলেন বার্তোমিউ৷
কাটালান ক্রীড়ামন্ত্রী জেরার ফিগেরাস গত সপ্তাহেই স্পষ্ট করে দেন, কাটালুনিয়া স্পেন থেকে স্বাধীনতা পেলে, বার্সেলোনা অন্য কোনো দেশেও খেলতে পারে৷
‘‘স্বাধীনতার ক্ষেত্রে লা লিগার কাটালান দলগুলোকে – অর্থাৎ বার্সেলোনা, এস্পানিওল ও জিরোনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কোথায় খেলতে চায় : স্পেনীয় লিগে, নাকি ইটালি বা ফ্রান্সের মতো কোনো প্রতিবেশী দেশে, নাকি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে,'' বলেন ফিগেরাস৷
বার্সার প্রেসিডেন্ট বার্তোমিউ দাবি করেন, দর্শক ছাড়া খেলার সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য ছিল, কাতালোনিয়ায় যা ঘটেছে ও ঘটছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো৷ এছাড়া বিভিন্ন বার্সা সমর্থক গোষ্ঠী মাঠে ঢুকে খেলা ভণ্ডুল করার হুমকি দিয়েছিল বলেও বার্তোমিউ জানান৷
সব সত্ত্বেও দর্শকবিহীন খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে দৃশ্যত বার্সার পরিচালকমণ্ডলীতে মতপার্থক্য ছিল, কেননা, সোমবার বোর্ডের একটি জরুরি বৈঠকের পর বার্তোমিউ দু'জন বোর্ড সদস্যের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন৷ তারা হলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কার্লেস ভিলারুবি ও পরিচালক ইয়র্দি মোনেস৷
একইসঙ্গে বার্তোমিউ এ-ও ঘোষণা করেন যে, বার্সা মঙ্গলবারের সাধারণ ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করবে৷ এস্পানিওল ও জিরোনা ক্লাব দু'টিও সোমবার ঘোষণা করে যে, তারা মঙ্গলবারের সাধারণ ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে৷ বার্সার সোমবারের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘এফসি বার্সেলোনা ‘গণতন্ত্রের টেবিল' আন্দোলনের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছে৷ কাজেই আগামীকাল ক্লাব বন্ধ থাকবে৷ (ক্লাবের) পেশাদারি বা যুব দলগুলো আগামীকাল ট্রেনিং করবে না৷''
লিওনেল মেসি ও জেরার্ড পিকেসহ বার্সেলোনার ফুটবল তারকাদের অনেকেই মঙ্গলবার ক্লাবের হয়ে ট্রেনিং করতেন না, কেননা, তারা সেদিন নিজের নিজের জাতীয় দলের সঙ্গে রয়েছেন৷
পিকের চোখে পানি
বার্সেলোনা ও স্পেন জাতীয় দলের খেলোয়াড় জেরার্ড পিকে কাটালুনিয়ার স্বনির্ধারণের অধিকারের জ্বলন্ত প্রবক্তা – রোববার সন্ধ্যায় তাঁর চোখে ছিল পানি৷ কিন্তু সেদিন সকালে পিকে বিনা বাধায় গণভোটে তার ভোট দিতে পেরেছেন৷
‘‘আমি কাতালোনিয়া ও তার সব মানুষের জন্য খুবই গর্বিত,'' দর্শকশূন্য ন্যু ক্যাম্পে লাস পালমাস-এর বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয়ের পর সাংবাদিকদের বলেন পিকে৷ আরো বলেন, ‘‘স্পেন ও নিরাপত্তা বাহিনীর সব প্ররোচনা সত্ত্বেও, তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন৷''
রোববারের খেলা শুরু হওয়ার আধ ঘণ্টার কম আগে দর্শকদের মাঠে না ঢুকতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ ৯৯,০০০ দর্শকের স্টেডিয়ামের সামনে ফ্যানরা তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে৷ ‘‘আমি হলে খেলতাম না,'' কাতালোনিয়ার একটি বেতার কেন্দ্রকে বলেছেন ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গুয়ার্দিওলা৷
অপরদিকে স্পেনের জাতীয় দলে পিকে'র ভূমিকা নিয়ে আবার বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ সোমবার পিকে জাতীয় দলের একটি ট্রেনিং সেশনে যোগদান করেন; সেখানে মাত্র কয়েক শ' দর্শক থাকলেও, পিকে-কে ধ্বনি শুনতে হয়, ‘‘পিকে, জাতীয় দল ছাড়ো!'' পিকে ইতিমধ্যেই বলেছেন যে, প্রথমত তিনি আগামী বছরের বিশ্বকাপের পরেই জাতীয় দল থেকে অবসর গ্রহণের ইচ্ছা রাখেন; দ্বিতীয়ত, জাতীয় দলের কোচ অথবা দেশের ফুটবল ফেডারেশন তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমস্যাজনক মনে করলে, তিনি তার আগেও যেতে রাজি৷ ইত্যবসরে পিকে যথারীতি কাতালোনিয়ায় পুলিশি নির্মমতা নিয়ে টুইট করে চলেছেন৷
No comments